পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

 “আমি আমার যৌবনকাল হইতে আরম্ভ করিয়া, কত মহাপাপের প্রশ্রয় দিয়াছি, এবং এ পর্য্যন্ত কত লোকের প্রাণহত্যা করিয়া, মহাপাপের সঞ্চয় করিয়া আসিয়াছি, তাহার উচিত দণ্ড কি প্রাপ্ত হইলাম? আমার এই সামান্য পাপ-প্রাণকে হত্যা করিলেই কি, আমার কৃত মহাপাপ সকলের দণ্ড হইল? আমার এই দেহের ভিতর যদি সহস্র প্রাণ থাকিত, এবং সেই সকল প্রাণকে লক্ষ লক্ষ প্রকার যন্ত্রণা দিয়া যদি হত্যা করা হইত, তাহা হইলেও আমার কৃত পাপরাশির সহস্রাংশের কিয়ৎপরিমাণে দণ্ড হইত কি না, বলিতে পারি না।

 “আপনি আমার জীবনের স্থূল স্থূল বিবরণ সকল অবগত হইতে চাহিতেছেন, এরূপ অবস্থায় আপনার অনুরোধ রক্ষা করিতে আমার কিছুমাত্র আপত্তি নাই। আমার যতদূর মনে আছে, বা যতদূর মনে করিতে পারিব, তাহার সমস্ত কথা আমি আপনার নিকট বর্ণন করিতেছ। কিন্তু মহাশয়! আমার কৃত মহাপাপ সকলের কাহিনী আপনি শ্রবণ করিবেন কি? কারণ, আমি যে সকল মহাপাপ করিয়া এ পর্য্যন্ত আমার জীবন অতিবাহিত করিয়া আসিয়াছি, সেই সকল কাহিনী কেবলমাত্র শ্রবণ করিলেও যে পাপ হয়, তাহারও প্রায়শ্চিত্ত বোধ হয়, এ জগতে নাই। মৃত্যুকালে আমার আর লোক-লজ্জার ভয় কি? আমার জীবনের কাহিনী আমার যতদূর স্মরণ আছে, এবং যতদূর স্মরণ করিয়া বলিতে পারিব, তাহা বলিতেছি। আপনি হউন, বা অপর যে কেউ হউন, যিনি শুনিতে চাহেন, শুনুন।”