পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাহাড়ে মেয়ে।
১৫

ভালবাসিতেন না, ইহা আমি বেশ বুঝিতে পারিয়াছিলাম। কিন্তু পাছে আমি অসন্তুষ্ট হই, এই ভয়ে তাঁহারা আমাকে স্পষ্ট করিয়া কিছু বলিতেন না। আমিও তাহা বুঝিতে পারিয়া যেন বুঝিতাম না; সুতরাং তারাদিদির বাড়ীতে আমার যাতায়াতেও ব্যাঘাত হইত না। তারাদিদির বাড়ীতে সর্ব্বদা যাতায়াত করিবার নিমিত্ত পিতামাতা কেন যে মনে মনে অসন্তুষ্ট হইতেন, তাহার অর্থ কিন্তু আমি তখন কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারিতাম না।

 “যে সময় আমি তারাদিদির বাড়ীতে গমন করিতাম, সেই সময় তাহার সহিত স্ত্রীলোক সম্বন্ধীয় কোন গল্প উপস্থিত হইলে বা কোনরূপ পুরাতন প্রসঙ্গ উত্থাপিত হইলে, নানারূপ যুক্তিপূর্ণ উদাহরণ দিয়া সে আমাকে বুঝাইতে চেষ্টা করিত যে, ‘পুরুষ ভিন্ন এ জগতে কোন স্ত্রীলোকের কোনরূপ সুখই হইতে পারে না এবং তাহার কোনরূপ উপায়ও হয় না। বৈষ্ণব-ধর্ম্ম-প্রচারক মহাত্মাগণ ইহার যথার্থ তত্ত্ব অবগত হইতে পারিয়াছিলেন, সেই নিমিত্তই তাঁহারা বিধি করিয়া দিয়াছেন, আপনার স্বামী পরলোক গমন করিলেও বৈষ্ণবকন্যাগণ অন্য পুরুষের আশ্রয় গ্রহণ করিতে পারে। ইহাতে তাহাদিগের অধর্ম্ম হয় না, বরং ইহকালে পরমসুখ ও পরকালে স্বর্গলাভ হইয়া থাকে।’

 “সেই সময়ে আমার যেরূপ বয়ঃক্রম ছিল, এবং নিত্য নিত্য যেরূপ সংসারসুখে নিরাশা হইয়া পড়িতেছিলাম, তাহাতে প্রত্যহ তারাদিদির সেইরূপ ভাবের কথা শুনিতে শুনিতে আমারও মন যেন একটু কেমন কেমন হইতে লাগিল।

 “এই সময় আমার পিতামাতার সংসারে নিতান্ত টানাটানি হইয়াছিল। আমার নিজের কোন দ্রব্যাদির আবশ্যক হইলে তাহার