পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ডিটেক্‌টিভ পুলিস, ১ম কাণ্ড।

জন্মিল। গোলাপকে এত দিবস পর্য্যন্ত যেরূপ ভাবে দেখিতাম, এখন হইতে তাহাকে আরও সহস্রগুণে সুন্দরী দেখিতে লাগিলাম—তাহাকে আরও ভালবাসিতে লাগিলাম। ক্রমে আমার কপাল পুড়িল, লজ্জা, ভয় ও ধর্ম্মের মস্তকে পদাঘাত করিয়া গোলাপ আমার সর্ব্বনাশ করিল। তখন হৃদয় হইতে সমস্ত ভাবনা দূরীভূত করিয়া কেবলমাত্র গোলাপের ভাবনাতেই রাত্রিদিন অতিবাহিত করিতে লাগিলাম।

 এই সময়ে এক দিবস প্রাতঃকালে সোণাগাছিতে অতিশয় গোলমাল শুনিতে পাইলাম। দেখিলাম, পুলিসের কর্ম্মচারীগণ সেইদিকে যাইতেছে, সুতরাং আমিও তাহাদিগের পশ্চাৎ পশ্চাৎ গমন করিলাম। দেখিলাম, একটী দ্বিতল বাটীর প্রাঙ্গনে এক ব্যক্তি মৃত অবস্থায় পড়িয়া রহিয়াছে, তাহার হস্ত, পদ ও মস্তক চূর্ণ হইয়া গিয়াছে। আমি তাহার নিকটে গিয়া দেখিলাম, দেখিয়া চিনিলাম যে, আমার সেই পরম বন্ধু,—কেদার বাবুরই এই দশা হইয়াছে। যাহাকে এক দণ্ড না দেখিয়া থাকিতে পারিতাম না, তাহার এই দশা দেখিয়া আমার মনে যেরূপ দুঃখ হইল, তাহা বলিতে পারি না। সেই দিন হইতে এক বৎসরের মধ্যে এমন একদিনও যায় নাই, যে দিন কেদারের নিমিত্ত আমার চক্ষু দিয়া অন্ততঃ এক বিন্দু জলও না পড়িয়াছে। যাহা হউক, উক্ত মৃতদেহ মেডিকেল কলেজে পরীক্ষার্থ প্রেরিত হইলে, পুলিস কর্ত্তৃক তাঁহার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান হইতে লাগিল। পরে শুনিয়াছিলাম, ঐ দ্বিতল বাটীতে কতকগুলি বার-বনিতা বাস করে, কেদার বাবু তাহাদিগের একজনের ঘরে বসিয়া আমোদ প্রমোদ ও সুরাপান করিয়া