পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
ডিটেক্‌টিভ পুলিস, ১ম কাণ্ড।

নিয়মিত বৃত্তি পাইবে, এবং বিনাবেতনে অধ্যয়ন করিতে পারিবে। আমি মহাবিপদে পড়িলাম; কারণ আমার খরচের টাকা বন্ধ হইলে আমি গোলাপের আর কিছুমাত্র সাহায্য করিতে পারিব না। অধিকন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্ত্তি হইবার সময় এল্, এ, পরীক্ষার প্রশংসাপত্র দেখাইতে না পারিলে, আমার সকল জুয়াচুরি প্রকাশ হইয়া পড়িবে। এই সকল ভাবিয়া আমি অতিশয় অস্থির হইলাম।

 এই সময়ে আমার অন্তঃকরণে পুনরায় অনুশোচনার ছায়া পড়িল। উহাকে শীঘ্র অন্তঃকরণ হইতে বাহির করিয়া দিবার জন্য কোন প্রকার উপায় উদ্ভাবনে নিযুক্ত হইলাম। তখন আমার মন একটু বিকৃত হইল, কিয়ৎক্ষণের নিমিত্ত একটু ভাবনা আসিয়া হৃদয় অধিকার করিল; কিন্তু আমার তীক্ষ্ণবুদ্ধির সাহায্যে তখনই তাহার এক উপায় বাহির করিলাম। জুয়াচুরির অন্য আর এক সোপান ঊর্দ্ধে উঠিলাম।

 অনুসন্ধানে জানিতে পারিলাম—ভবানীপুর হইতে এক ব্যক্তি ঐ বৎসর এল্, এ, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছে, তাহার নাম ও আমার নাম একই। মনে মনে স্থির করিলাম, আমি ভবানীপুরে যাইয়া তাহার সহিত দুই এক দিবসের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করিব; ও কৌশলে তাহার প্রশংসাপত্র চুরি করিয়া আনিব। এই পরামর্শ স্থির করিয়া পরদিন ভবানীপুরে গেলাম। সন্ধান করিয়া তাহার বাটীও পাইলাম, দেখিলাম, আমার অভীষ্ট-সিদ্ধির পথ আরও পরিষ্কার হইয়াছে। কারণ দুই তিন দিবস হইল, সেই ব্যক্তির মৃত্যু হইয়াছে। তাহার একমাত্র বৃদ্ধা মাতা পুত্ত্রশোকে অধীরা হইয়া রোদন করিতেছে।