পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডাক্তার বাবু।
২৭

 আমি ধীরে ধীরে বাটীর ভিতর প্রবেশ করিয়া বৃদ্ধার নিকট যাইয়া কুটুম্ব বলিয়া পরিচয় দিলাম,—তাঁহার দুঃখে কপট দুঃখ প্রকাশ করিয়া তাঁহাকে সান্ত্বনা করিতেও চেষ্টিত হইলাম। এইরূপে নিত্য নিত্য তাহার বাটীতে যাইয়া তাহাকে সান্ত্বনা, এবং তাঁহার আবশ্যকীয় খরচের নিমিত্ত দুই এক টাকার সাহায্যও, করিতে লাগিলাম। ক্রমে পাঁচ সাত দিবসের মধ্যে বৃদ্ধা আমাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিলেন। এক দিবস তাঁহার ঘরে যত কাগজপত্র ছিল, সমস্ত আনিয়া আমাকে দেখাইলেন ও বলিলেন, “ইহার ভিতর কোন আবশ্যকীয় কাগজপত্র আছে কি না বাছিয়া দাও।” আমার মনােভীষ্ট সিদ্ধ হইল। প্রশংসা পত্রখানি প্রথমেই আপনার পকেটে রাখিলাম। অন্য কাগজপত্র অন্বেষণ করিতে করিতে একখানি ১০৲ দশ টাকার ও একখানি ১০০৲ টাকার নােট পাইলাম। দশ টাকার নােটখানি বৃদ্ধাকে দিলাম, সে আমাকে আশীর্ব্বাদ করিল। অপর খানির বিষয় তাহাকে কিছুমাত্র বলিলাম না, সেইখানি লুকাইয়া আনিয়া গােলাপের হস্তে অর্পণ করিলাম। গােলাপ সন্তুষ্ট হইল; সে দিবস আরও অধিক যত্ন করিল। বৃদ্ধার সহিত সেই দিবস হইতে সম্বন্ধ মিটিল, আর ভবানীপুরের দিকে পদার্পণ করিলাম না।

 পরদিন মেডিকেল কলেজে গমন করিয়া ঐ প্রশংসাপত্র দেখাইয়া কলেজে ভর্ত্তি হইলাম। নিয়মিত বৃত্তি পাইবার আদেশ হইল। এতদিবস পর্য্যন্ত কেবল পিতাকেই ফাঁকী দিয়াছি, অদ্য বিলাতী চক্ষে ধূলিমুষ্টি নিক্ষেপ করিলাম। পিতা খরচের টাকা বন্ধ করিলেন সত্য, কিন্তু মাসিক বৃত্তির টাকা