পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অদ্ভুত ফকির।
১৯

পদচিহ্ন দেখিতে পাইয়াছি, তাহা দেখিয়া আমার স্পষ্টই বোধ হইতেছে যে, চিহ্ন গুলি ফকিরের পায়ের চিহ্ন। ফকিরের পা ও এই জমীর উপর যে পায়ের দাগ রহিয়াছে তাহা এক। আর কোন লোকের পদচিহ্ন এখানে দেখিতে পাইতেছি না।”

 আমি আশ্চর্য্যান্বিত হইলাম না। কারণ আমিও ইতিপূর্ব্বে ঐ প্রকারই অনুমান করিয়াছিলাম। কিন্তু সে কথা প্রকাশও করিলাম না। দামোদরকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “আর একবার ভাল করিয়া দেখ, মানুষ মাত্রেরই ভুল হইতে পারে।”

 আমার কথায় দামোদর হাস্য করিল। বলিল, “হুজুর! আপনি আমর ভাল জানেন না। সেই জন্যই এই কথা বলিয়াছেন। কিন্তু আমার বেয়াদবি মাপ করিবেন, আমি কখনও দুইবার পরীক্ষা করি না। এ অঞ্চলে আমার মত লোক আর নাই বলিলেও হয়; কিন্তু হুজুর, সেজন্য আমি আপনার নিকট অহঙ্কার করিতেছি না। আজ আপনি যেমন বলিলেন, বহুদিন পূর্ব্বে একজন সাহেবও এই কথা বলিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি অবশেষে আমার মতেই মত দিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। যে সকল চিহ্ন এই ভূমিতে দেখিতে পাইতেছি, তাহা ঐ ফকিরেরই পদচিহ্ন। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, কতকগুলি পদচিহ্ন দেখিয়া স্পষ্টই বোধ হইতেছে যে, সেই লোক যেন এই ঘর হইতে বাহির হইয়া গিয়াছে। ফকির যখন ঘরের ভিতর মরিয়া পড়িয়াছিল, তখন সে যে এই কুটীর হইতে বাহির হয় নাই, তাহা স্পষ্টই বোধ হইতেছে।”

 আমি হাসিয়া উঠিলাম। বলিলাম, “তুমি ভাবিয়াছিলে ফকির আত্মহত্যা করিয়াছে, কেমন?”