পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
দারোগার দপ্তর, ১৯৫ সংখ্যা।

কিন্তু সাবধান, যদি ভবিষ্যতে আর কখনও তোমায় এরূপ কার্য্য করিতে দেখিতে পাই, তাহা হইলে আমি নিশ্চয়ই তোমায় দূর করিয়া দিব।”

 আবদুল আযর দ্বিরুক্তি করিল না। সে ঘাড় হেঁট করিয়া ছিল, লজ্জায় মাথা তুলিতে পারিল না।

 আমি তাহাকে তদস্থ দেখিয়া বন্দীর দিকে লক্ষ্য করিয়া বলিলাম, “হরশঙ্কর! তোমার বাহাদুরী আছে। তুমি পৈতৃক সম্পত্তি বা উত্তরাধিকারী হইবার জন্য যে উপায় অবলম্বন করিয়াছিলে, তাহা অতি চমৎকার। জানি না, অন্য কোন লোকের হাতে পড়িলে কি হইত। কিন্তু আমার মত লোকের চক্ষে ধূলি দিতে চেষ্টা করাই তোমার বাতুলের কার্য্য হইয়াছে। যখনই তুমি আমার নিকট ফকিরের মৃত্যুর কথা বলিয়াছ, তখন হইতেই তোমার উপর আমার সন্দেহ হইয়াছে। যে সকল কথা বলিয়াছ, তাহা নিশ্চয়ই শোকোদ্দীপক সন্দেহ নাই; কিন্তু সেই সেই কথা বলিলে লোকের মনে যেরূপ দুঃখের উদয় হওয়া উচিত অর্থাৎ সেই সকল কথা সত্য হইলে লোকে যেরূপ আন্তরিক বলিতে পারে, তুমি সেরূপ হৃদয়ের সহিত ঐ সকল কথা বলিতে পার নাই। তুমি যেন রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করিয়াছিলে। কিন্তু সে অভিনয়েও তুমি তাদৃশ কৃতাকার্য্য হইতে পার নাই—কথাগুলি করুণাত্মক বটে কিন্তু তোমার বর তেমন করুণ ছিল না।”

 আমি চুপ করিলাম। দেখিলাম, হরশঙ্কর আমার দিকে চাহিয়া একমনে আমার কথাগুলি শুনিতেছে। জিজ্ঞাসা করিলাম, “কেমন, আমার কথা সত্য কি না? তাহার পর যখন দামোদর কুটীরের মধ্যস্থ পায়ের দাগ ও ফকিরের পা এই দুইটার দিকে