পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঁশী।

স্ত্রী ও এক টী দুগ্ধপোষ্য বালক; দুইটী ভ্রাতুষ্কন্যা ছিল—দুই বৎসর পূর্বে একটীর মৃত্যু হওয়ায় এখন আমার ভাবী বধূমাতাই একমাত্র ভ্রাতুষ্কন্যা; তাঁহার শাশুড়ী ঠাকুরাণী ও দূরসম্পর্কীয়া এক বিধবা ভগ্নী। সরকার, চাকর, দাসী, দরোয়ান প্রভৃতি অনেক গুলি বাজে লোকও আছে। রাত্রি প্রায় একটার পরে আমি শয়ন করি। আমার পার্শ্বের গৃহে আমার ভাবী বধূমাতা শয়ন করিয়া ছিল। একজন দাসী তাহাকে মানুষ করিয়াছিল, সেও সেই ঘরে থাকিত। অধিক রাত্রিজাগরণ জন্যই হউক, অথবা অন্যত্র শয়ন করিবার জন্যই হউক, আমার ভাল নিদ্রা হইল না। রাত্রি চারিটার সময় সহসা পার্শ্বের গৃহ হইতে এক ভয়ানক চীৎকার ধ্বনি শুনিতে পাইলাম। কণ্ঠস্বর আমার ভাবী বধূমাতার বলিয়াই বোধ হইল। আমি শয্যা হইতে উঠিলাম, আস্তে আস্তে গৃহ হইতে বহির্গত হইলাম। মনে করিলাম, পাশের ঘরে গিয়া ব্যাপার কি দেখিয়া আসি; কিন্তু সাহস করিলাম না। নূতন কুটুম্বের বাড়ী, তাহার উপর সে ঘরে আমারই ভাবী বধূমাতা শুইয়া আছে। সাত পাঁচ ভাবিতেছি, এমন সময়ে সেই ঘরের দরজা খুলিয়া গেল। দাসী এক হস্তে একটী অলোক ও অপর হস্তে বধূমাতাকে ধরিয়া তাড়াতাড়ি ঘর হইতে বাহির হইল। আমি তখনই তাহাদের নিকট যাইলাম। অন্য সময় হইলে বধূমাতা আমাকে দেখিবামাত্র পলায়ন করিত; কিন্তু তখন সে পলায়ন করিল না। তাহার অবস্থা দেখিয়া বোধ হইল, তাহার জ্ঞান নাই। তাহার সর্বাঙ্গ থর থর করিয়া কঁপিতেছে, ঘন ঘন দীর্ঘনিশ্বাস পড়িতেছে ও মুখ নিতান্ত মলিন হইয়া গিয়াছে। বধূমাতার এইরূপ অবস্থা দেখিয়া, আমারও ভয় হইল। আমি ব্যস্ত-সমস্ত হইয়া, দাসীকে