পাতা:বিদায় ভোজ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
দারোগার দপ্তর, ২০৩ সংখ্যা।

বাড়ীর ভিতরে ডাকিয়া আন। একবার সকলে মিলিয়া ভাল করিয়া অন্বেষণ করা যাউক।”

 সুশীল তখনই আমার আদেশ পালন করিল। কনষ্টেবল দুই জন আমার নিকটে আসিলে আমি তাহাদিগকে লইয়া সুশীলের সহিত ভিতরের দালানে গমন করিলাম এবং পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে সকল স্থান অন্বেষণ করিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশতঃ আংটীটার কোন নিদর্শন পাওয়া গেল না।

 প্রায় দুই ঘণ্টা কাল যৎপরোনান্তি পরিশ্রমের পর আমরা পুনরায় বাহির-বাটীতে আগমন করিলাম। সুশীলের মাতাঠাকুরাণী তখনই আমাদের নিকট উপস্থিত হইয়া আংটীর কথা জিজ্ঞাসা করিলেন এবং আমার উত্তর শুনিয়া দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করত বলিলেন, “এখন উপায় কি বাবা! আংটীটা কি আর পাওয়া যাইবে না?”

 সুশীলের মাতার সেই বিমর্ষ মুখমণ্ডল দেখিয়া ও তাঁহাকে ঘন ঘন দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিতে অবলোকন করিয়া আমি আন্তরিক দুঃখিত হইলাম। সহসা তাঁহার প্রশ্নের কি উত্তর দিব তাহা ভাবিয়া স্থির করিতে পারিলাম না। কিছুক্ষণ চিন্তার পর বলিলাম, “বাস্তবিকই বড় আশ্চর্য্য কথা! যখন সেখানে সমস্ত আত্মীয় স্বজন উপস্থিত ছিলেন, তখন তাঁহাদের মধ্যে যে কেহ সেই আংটীটা চুরি করিবেন এমন ত বোধ হয় না। কিন্তু সকল স্থানই ত তন্ন তন্ন করিয়া অন্বেষণ করিলাম। এখন আমার বড় ভাল বোধ হইতেছে না। পূর্ব্বে ভাবিয়াছিলাম, আংটীটা কোথাও পড়িয়া আছে কিন্তু এখন আমার আর সে ধারণা নাই। নিশ্চয়ই কোন লোক উহার লোভ সম্বরণ করিতে পারে নাই।”