পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঁশী।
৪৭

 অ। আপনি কি সাপ স্বচক্ষে দেখিয়াছেন?

 আ। নিশ্চয়ই। যে সর্প সম্ভবত আপনার ভাবী বধুমাতাকে দংশন করিত, তাহাকে মারিয়া ফেলিয়াছি।

 অ। সুধা যে বাঁশীর শব্দ শুনিতে পাইত, তাহাই বা কিসের?

 প্রাণকৃষ্ণ বাবু সর্প গুলিকে এরূপ শিখাইয়াছিলেন যে, সেই বাণীর স্বর শুনিলেই তাহারা যথাস্থানে ফিরিয়া যাইত।

 অ। কেন তিনি এমন নিষ্ঠুরের কাজ করিতেন?

 আ। অর্থলোভ;—ভ্রাতুষ্কন্যাগণের বিবাহ হইলে তাহাকে অনেক টাকা দিতে হয়। আমরা যখন সেই ঘরের মধ্যে প্রবেশ। করিলাম, সেই সময় ঐ স্থানের কয়েকজন লোক ও অমরেন্দ্র বাবু আমাদিগের সহিত ঐ ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছিলেন। ঘরের ভিতর প্রবেশ করিয়াই দেখিলাম, প্রাণকৃষ্ণ বাবু সেই ঘরের মধ্যে মৃত্তিকার উপর অচৈতন্য অবস্থায় পড়িয়া আছেন। তাঁহার কি অবস্থা হইয়াছে জানবার নিমিত্ত যেমন তাহার নিকট গমন করিলাম, অমনি ভয়ানক সপগর্জন শব্দ সকলের কানে প্রবেশ করিল। সকলে অতিশয় বিস্মিত হইয়া, কেহ বা ভয়ে ঘরের বাহিরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন; কেহ বা কিসের শব্দ জানিবার নিমিত্ত সেইস্থানে একটু দাড়াইলেন।

 সেই সময় দেখিতে পাওয়া গেল, ঐ ঘরের এক প্রান্তে একটা ভয়ানক বিষধর তাহার ফণা প্রায় দেড় হস্ত উথিত করিয়া, দক্ষিণ ও বামে সঞ্চালিত পূর্ব্বক ভয়ানক গর্জন করিতেছে।

 এই অবস্থা দেখিয়া আমরা অতিশয় বিস্মিত হইলাম; ও দ্রুতবেগে সকলেই সেই ঘর হইতে বহির্গত হইলাম।