পাতা:ঘর-পোড়া লোক (শেষ অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঘর-পােড়া লােক।
১৯

 হোসেন। যাহার সময় উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে, তাহার আর উপায় নাই। এখন বলুন দেখি, আপীলে কোনরূপ ফল পাইবার উপায় আছে কি?

 দারোগা। আমার বোধ হয়, আপীলে এ মোকদ্দমার কিছু হইবে না।

 হোসেন। এই মোকদ্দমার কাগজ-পত্র ত আপনি কিছুই দেখেন নাই, তবে আপনি কিরূপে বলিতেছেন যে, আপীলে কোনরূপ ফল পাওয়া যাইবে না?

 দারোগা। কাগজ-পত্র না দেখিলেও আমার জানিবার বিশেষ কারণ আছে। যে জজসাহেব এই মোকদ্দমার বিচার করিয়াছেন, তাঁহাকে আমি অনেক দিবস হইতে উত্তমরূপে অবগত আছি। তাঁহার মত বুদ্ধিমান কর্ম্মচারী অতি অল্পই দেখিতে পাওয়া যায়। তাহার উপর মোকদ্দমার রায় লিখিবার ক্ষমতা তাঁহার যেরূপ আছে, সেরূপ ক্ষমতা এই প্রদেশীয় বর্তমান কর্ম্মচারীগণের মধ্যে আর কাহারও আছে কি না সন্দেহ। এ পর্যন্ত তাহার বিচারিত যত মোকদ্দমার আপীল হইয়াছে, হাইকোর্ট হইতে তাহার একটীও মোকদ্দমার রায় পরিবর্তিত হয় নাই। বরং তাঁহার রায় দেখিয়া, সকলেই তাঁহার প্রশংসা করিয়াছেন।

 হোসেন। যে আশায় আমি উঁহাদিগকে এতক্ষণ পর্যন্তু জীবিত রাখিয়াছি, তবে কি আমাদিগের সে আশা নাই?

 দারোগা। আপীলের আশা ছাড়িয়া দিয়া যদি আর কোনরূপ উপায় থাকে, তাহার চেষ্টা দেখুন। আপীলে কিছু হইবে না।