পাতা:বেওয়ারিশ লাস - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দারােগার দপ্তর, ৭৩ম সংখ্যা।

রহিয়াছে। সেই শিশিটী নিজের হাতে করিয়া উত্তমরূপে পরীক্ষা করিয়া দেখিলাম। দেখিলাম, প্রায় পাঁচ ছয় বৎসর পূর্ব্বে সেই শিশিতে করিয়া ব্যাথগেট কোম্পানির ঔষধালয় হইতে একজন সাহেবের নিমিত্ত ঔষধ আসিয়াছিল। এরূপ শিশি প্রায় সকল গৃহেই পাওয়া যায়। বিশেষতঃ সাহেব দিগের গৃহের শিশি, বোতল প্রভৃতি তাহাদিগের খানসামা বাবুর্চিরা প্রায়ই বিক্রীওয়ালাদিগের হস্তে বিক্রয় করিয়া ফেলে। বিক্রীওয়ালারা সেই সকল শিশি-বোতল আনিয়া শিশি-বোতল-ব্যবসায়ী দোকানদারের হস্তে বিক্রয় করে। তাহাদিগের দোকান হইতে যাহাদিগের প্রয়োজন হয়, তাহারা ক্রয় করিয়া লইয়া যায়। এরূপ অবস্থায় সেই ঔষধের শিশি উপলক্ষ করিয়া অনুসন্ধান করিলে যে কোন রূপ সবিশেষ ফল লাভের সম্ভাবনা, তাহা বিবেচনা করিলাম না। যে স্থানের শিশি সেই স্থানে রাখিয়া দিয়া, অন্য কোন উপায় চিন্তা করিতে লাগিলাম। কিন্তু ভাবিয়া চিন্তিয়া কোন উপায়ই স্থির করিয়া উঠিতে পারিলাম না।

 এদিকে নানা স্থান হইতে নানা লোক আসিয়া সেই মৃতদেহ দর্শন করিতে লাগিল। কেহ বা তাহার অবস্থা দেখিয়া দুঃখ প্রকাশ, কেহ বা হত্যাকারীর উদ্দেশে গালি প্রদান, প্রভৃতি যাহার মনে যাহা আসিতে লাগিল, সে তাহাই বলিতে বলিতে সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিতে লাগিল। তাহাদিগের কথার ভাবে স্পষ্টই অনুমান হইতে লাগিল যে, সেই মৃতদেহ তাহাদিগের মধ্যে কেহই চিনিয়া উঠিতে পারে নাই।