পাতা:বেওয়ারিশ লাস - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
দারোগার দপ্তর, ৭৩ম সংখ্যা।

 আমার এই কথা শুনিবামাত্র সেই পরদার অন্তরালবর্ত্তী স্ত্রীলোকদিগের মধ্য হইতে একটী স্ত্রীলোক হঠাৎ পরদা ঠেলিয়া বহির্গত হইয়া পড়িল, এবং সেই রাস্তার উপর আমাদিগের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া কহিল, “আমি বুঝিতে পারিতেছি, আমারই সর্ব্বনাশ হইয়াছে! চলুন, মহাশয়! আমাকে সঙ্গে করিয়া লইয়া চলুন, আমি এখনই গিয়া সেই মতদেহ দেখিয়া আসি।”

 আমি নিজে যে প্রস্তাব করিব মনে করিয়াছিলাম, সেই স্ত্রীলোকটী আপনা হইতেই সেই প্রস্তাব করিল। সুতরাং বিনা-বাক্যব্যয়ে আমি তাহাতে সম্মত হইলাম, এবং আমার সমভিব্যাহারে যে গাড়ি ছিল, সেই গাড়িতে উঠিতে কহিলাম। রোদন করিতে করিতে সেই স্ত্রীলোকটী তিন চারিটী ছোট ছোট বালক-বালিকার সহিত সেই গাড়িতে গিয়া উপবেশন করিল। আমি তাহাদিগকে সঙ্গে লইয়া সেই মৃতদেহ যে স্থানে রক্ষিত ছিল, সেই স্থান অভিমুখে প্রস্থান করিলাম। গাড়িতে আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তুমি কি মেহের আলির কন্যা?”

 স্ত্রীলোক। হাঁ মহাশয়!

 আমি। তোমরা কয় সহোদরা?

 স্ত্রীলোক। আমি ভিন্ন আমার পিতার পুত্র কন্যা আর কেহই নাই।

 আমি। রব্বানি কি তোমার স্বামী?

 স্ত্রীলোক। হাঁ।

 আমি। রব্বানি কি তোমার পিতার বাড়ীতেই থাকে?