পাতা:বেওয়ারিশ লাস - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বেওয়ারিশ লাশ।
৫৭

 মেহের। সেকি মহাশয়! তাহা হইলে আমি আমার জামাতাকে কি হত্যা করিয়াছি? আপনারা এইরূপ বিশ্বাস করেন?

 আমি। কাজেই বিশ্বাস করিতে হইতেছে। তোমার নিজের কথার ভাবেই বেশ অনুমান হইতেছে, এই হত্যাকাণ্ডে তুমি সম্পূর্ণরূপে অপরাধী। তুমি এখন প্রকৃত কথা কি, তাহা বল দেখি। তাহা হইলে তুমি কতদুর অপরাধে অপরাধী, তাহা আমরা অনায়াসেই বুঝিতে পারিব, ও জানিতে পারিব, এই কার্য্য তুমি ইচ্ছা করিয়া করিয়াছি, কি ক্রোধের বশবর্ত্তী হওয়ায়, এই কার্য্য হঠাৎ তোমার দ্বারা হইয়া গিয়াছে।

 মেহের আলি আমার কথায় আর কোনরূপ উত্তর প্রদান না করিয়া সেই স্থানে বসিয়া পড়িল।

 মেহের আলির কন্যা তখন সেই স্থানে উপস্থিত ছিল, আমাদিগের এই সকল কথা শুনিয়া সে কহিল, “বাবা! এ কার্য্য তুমিই করিয়াছ! তা’ বেশ করিয়াছ, নিজের কন্যাকে বিধবা করিয়া পিতার উপযুক্ত কার্য্যই করিয়াছ!” এই বলিয়া সে সেই স্থান হইতে একটু দূরে গিয়া ক্রন্দন করিতে লাগিল।

 মেহের আলির কথা শুনিয়া ও তাহার অবস্থা দেখিয়া, আমাদিগের মনে স্পষ্টই প্রতীতি জন্মিল যে, মেহের আলি ব্যতীত এই কার্য্য আর কাহারও দ্বারা হয় নাই। তবে লাস স্থানান্তরিত করিবার সময় অপর কোন ব্যক্তি সাহায্য করিলেও করিতে পারে।

 মনে মনে এইরূপ ভাবিয়া সেই বাক্স ও উহার ভিতর যে ঔষধের শিশি পাওয়া গিয়াছিল, তাহা লইয়া মেহের আলি এবং চাপরাশির সহিত পুনরায় সেই স্কুলে গিয়া উপস্থিত হইলাম।