পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৭৫

না তখন মহাত্মাজীকে পুনরায় অনুরোধ করা ছাড়া আমার অন্য উপায় রহিল না যে, ত্রিপুরীতে তাঁহার উপর যে দায়িত্বভার ন্যস্ত হইয়াছে তিনি যেন অনুগ্রহপূর্ব্বক সে দায়িত্ব নিজেই বহন করেন এবং পন্থ-প্রস্তাবানুযায়ী নিজেই ওয়ার্কিং কমিটির সভ্য মনোনীত করেন। আমি তাঁহাকে ইহাও বলিয়াছি যে, তিনি যে ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিবেন তা মানিয়া লইতে আমি বাধ্য থাকিব, যেহেতু পন্থ-প্রস্তাবকে কার্য্যকরী করাই আমার স্থির সঙ্কল্প। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্যের বিষয় মহাত্মাজী কর্মপরিষদ গঠনে তাঁহার চূড়ান্ত অক্ষমতা (utter incompetency) জ্ঞাপন করিয়াছেন।’ অতঃপর সুভাষচন্দ্র বলেন যে, তিনি গান্ধীজীর দ্বিতীয় নির্দ্দেশক্রমে পূর্বতন সদস্যদের সহিত ঘরোয়া বৈঠকে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা দ্বারা সিদ্ধান্তে পৌঁছিতে যধাসাধ্য চেষ্টা করেন, কিন্তু সে চেষ্টাও ফলবতী হয় নাই। এমতাবস্থায় অনন্যোপায় হইয়া তিনি পদত্যাগ করিলেন। সুভাষচন্দ্রের শেষ কথাগুলি এই,—“আমি গভীরভাবে চিন্তা করিয়া দেখিয়াছি নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সম্মুখে যে সমস্যা দেখা দিয়াছে তাহার কোনরূপ সমাধান করা যায় কিনা। যতই ভাবিয়াছি এই কথাই আমার মনে হইয়াছে যে বর্ত্তমান অবস্থায় আমার সভাপতিপদে বহাল থাকাই সমস্যা সমাধানের পথে প্রতিবন্ধক হইয়াছে। নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটি হয়ত এমন কর্মপরিষদ গঠন করিতে চাহেন যেখানে সভাপতিপদে আমি অনুপযুক্ত বিবেচিত হইব। আমি ইহাও মনে করি যে, নূতন সভাপতি থাকিলে নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির পক্ষে এই সমস্যার সমাধান করা অধিকতর সহজ হইবে। কাজেই বিশেষরূপে চিন্তা করিয়া ও বর্ত্তমান অবস্থায় আমার পদত্যাগ মঙ্গলজনক ও কমিটির কার্য্যে সহায়ক হইবে বিবেচনা করিয়াই আমি স্বেচ্ছায় ও সানন্দে আপনাদের সমক্ষে আমার পদত্যাগ পত্র উপস্থিত করিলাম।”