পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
৩৩১

এইভাবে দুইদিক অর্থাৎ ভিতর ও বাহির হইতে আক্রান্ত হইবে,তখন উহা ভাঙ্গিয়া পড়িবে এবং ভারতের জনগণ পুনরায় তাহাদের স্বাধীনতা ফিরিয়া পাইবে। ভারত সম্পর্কে এক্সিস শক্তির মনােভাব লইয়া মাথা ঘামাইবার কোন প্রয়ােজন নাই। যদি বিদেশে ভারতীয়গণ এবং দেশে জনগণ তাহাদের কর্ত্তব্য পালন করে, তবে ব্রিটিশকে ভারত হইতে তাড়াইয়া দেওয়া ভারতীয় জনগণের পক্ষে সম্ভব হইবে এবং তাহাদের ৩৮ কোটী ৮০ লক্ষ স্বদেশবাসীকে মুক্ত করা সম্ভব হইবে।

 এক জাতীয় জীব আছে, যাহারা বলিবে ৩৮ কোটী ৮০ লক্ষ লােক যদি ব্রিটীশ শক্তিকে ভারত হইতে তাড়াইতে না পারে তবে বিদেশস্থ ত্রিশ লক্ষ ভারতীয় কি ভাবে তাহাদিগকে তাড়াইতে পারিবে? বন্ধুগণ, আয়ার্ল্যাণ্ডের ইতিহাস দেখুন। যদি ত্রিশলক্ষ আইরিস ব্রিটীশের শৃঙ্খলে সামরিক আইনের আওতায় পাঁচ সহস্র সিনফিন স্বেচ্ছাসেবকের সাহায্যে ১৯২১ সালে ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্টকে নতজানু হইতে বাধ্য করিতে পারে, তবে স্বদেশে শক্তিশালী আন্দোলনে সচেতন জাতির সদিচ্ছায় পুষ্ট ত্রিশ লক্ষ ভারতীয় কেন ভারত হইতে বৃটিশকে তাড়াইতে পারিবে না?

 বিদেশস্থ ভারতীয়েরা বিশেষভাবে পূর্ব্ব এশিয়ার ভারত সন্তানরা প্রাণপণ চেষ্টা করিবেন। আমাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কার্য্যকরী ব্যবস্থা অবলম্বনের জন্য স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী গবর্নমেণ্ট গঠন করা আমার অভিপ্রায়। এই গভর্ণমেণ্ট ভারতীয় জনগণের শক্তির সমাবেশ করিবেন এবং ভারতের ব্রিটীশ সৈন্য বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করিবেন। যখন যুদ্ধে আমরা জয়ী হইব ও ভারত স্বাধীন হইবে—এই অস্থায়ী গবর্ণমেণ্ট তখন স্বাধীন ভারতের স্থায়ী গবর্ণমেণ্টের অনুকূলে সরিয়া দাঁড়াইবে। স্থায়ী গবর্ণমেণ্ট ভারতের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ীই গঠিত হইবে।

 বন্ধুগণ! পূর্ব্ব এশিয়ায় ত্রিশ লক্ষ ভারতীয়ের অর্থ ও জনশক্তি দিয়া