পাতা:সীমান্ত গান্ধী - সুকুমার রায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সূচনা

প্রতিক্রিয়ার কথা ভুলিতে পারে নাই। কাজেই তৎকালীন কংগ্রেসী নেতৃবৃন্দ এই সীমা-নির্দেশের ব্যাপারে আর একটি যুদ্ধের আশঙ্কা দেখিতে পাইলেন। সৈন্যব্যয় সম্পর্কে দী এদুলচী হিসাব করিয়া দেখান যে, ১৮৬৪ হইতে ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত সৈন্যব্যয় মাত্র ৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পায়; আর ১৮৮৫-৮৬—১৮৯০-৯১ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে তাহা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাইয়া ৫৪ কোটি টাকায় দাড়ায়। আর এই অর্থ ব্যয় করা হয় শুধু রুশিয়ার আক্রমণ-প্রতিরোধ করিবার জন্য। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ সামরিক দিক দিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সুতরাং সীমান্ত রক্ষার অজুহাতে ভারতীয়দের ব্যয়ে বিরাট বিদেশী সৈন্যবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। তাই সেই সময় ১৮৯১ খ্রষ্টাব্দে কংগ্রেসের অধিবেশনে বালগঙ্গাধর তিলক এই মর্মে এক প্রস্তাব করেন যে, ভাবী আক্রমণের আশঙ্কায় জলের মত অর্থব্যয় না করিয়া, ভারতবাসীরা যাহাতে সত্য সত্যই আত্মরক্ষায় সমর্থ হইতে পারে সেজন্য অস্ত্র-আইনের কঠোরতা দুর করিয়া সামরিক শিক্ষার প্রবর্তন এবং বিভিন্ন শ্রেণী ও সম্প্রদায় হইতে স্বেচ্ছাসৈন্য লইয়া রক্ষীবাহিনী গঠন করা হউক। কিন্তু নেতৃবৃন্দের সে আবেদন ব্যর্থ হয়। ভারতের অভ্যন্তরে গণজাগরণের সূচনা এবং ভারতের বাহিরে যখন ইউরোপে সাম্রাজ্য লইয়া বিরোধী স্বার্থের হানাহানি চলিতেছে, সেই সময় ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের এক নিভৃত পল্লীতে এই ঋষিকল্প মানবের জন্ম হয়।