পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র
২৮

সুভাষচন্দ্রও সাহেবী পোষাকে সজ্জিত হইয়া স্কুলে যাইতেন। কিন্তু এই স্কুলে বেশী দিন তাঁহার মন টিকিল না। তিনি পিতাকে অনুরোধ করিয়া কটকের রাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে আসিলেন। সেখানে বাঙ্গালী, উড়িয়া, মাদ্রাজী সকলেই তাহার দেশের ছেলে। তাঁহাদের পোষাক পরিচ্ছদ সাদাসিধা। শিক্ষকগণের শিক্ষার ধারাও জাতীয় প্রকৃতির অনুকূল। এই সব দেখিয়া শুনিয়া তাহার মনে জাতীয় ভাব জাগিয়া উঠিল। তিনি বিজাতীয় পোষাক পরিচ্ছদ ত্যাগ করিবার সংকল্প করিলেন।

 এই সংকল্প করিবার পরদিন তিনি দেশীয় পরিচ্ছদ ধুতি জামা পরিয়াই স্কুলে গেলেন। ‘জানকী সাহেবের’ ছেলেকে এইভাবে দেশীয় পরিচ্ছদে সজ্জিত দেখিয়া শিক্ষক ও ছাত্র সকলেই বিস্মিত হইল। জানকীবাবু পরে এই ব্যাপার অবগত হইয়া সুভাষচন্দ্রকে কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। সুভাষচন্দ্র নির্ভীক কণ্ঠে উত্তর দিলেন, “বাবা, এই ত আমাদের জাতীয় পোষাক। প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রগণ সকলেই ত এই পোষাক প’রে স্কুলে আসেন। আমার কি উচিত সেখানে সাহেব সেজে যাওয়া?” উত্তর শুনিয়া জানকীবাবু স্তম্ভিত হইলেন। তিনি আর কোন প্রতিবাদ করিতে পারিলেন না। সুভাষচন্দ্রের বাল্যকাল এই ভাবেই গঠিত হইয়াছিল।