পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
১২৫

বেষ্টিত চন্দনচর্চ্চিত হইয়া শোভা পাইতেছিল—তাহার মৃত মেসো মহাশয়—সত্যবতীর স্বামীর চির-অনাদৃত, চিরঅবহেলিত অস্পষ্টপ্রায় ফটোখানি। এখানি বরাবর বাহিরে বৈঠকখানার দেওয়ালে টাঙ্গান থাকিত। ত্রিপুরাচরণের মৃত্যুর পর হইতে ছবিখানি অযত্নে মলিন অস্পষ্ট হইয়া আসিয়াছে। সত্যবতী কখনও ইহার প্রতি যত্ন লওয়া আবশ্যক মনে করেন নাই। পূর্ব্বপাপের প্রায়শ্চিত্তার্থেই অপরাধিনী যেন ক্ষমার আবেদন লইয়া এখন পূজাকালে অনেক সময় ধ্যানমগ্ন হইয়া ইহারই সম্মুখে বসিয়া থাকেন। ভূমে লুটাইয়া অনেকক্ষণ ধরিয়া প্রণাম করেন। আর একখানি চৌকির উপর একজন সৌম্য শান্ত মহাপুরুষের তৈলচিত্র সজ্জিত—ইনি বানপ্রস্থাবলম্বী, সংসারত্যাগী, সত্যবতীর গুরুদেব। ইঁহার নিকটে মন্ত্র লইয়া উপদেশ পাইয়া সত্যবতী নিজের ব্যর্থ জীবনে সার্থকতা অনুভব করিতে শিখিয়াছেন। আজকাল পূজা-শেষে তিনি যখন বাহিরে আসেন, অমিয়ার মনে হয় একটি স্বর্গীয় শান্তিপূর্ণ ভাব-জ্যোতিঃতে যেন তাঁহার মুখখানি প্রদীপ্ত হইয়া উঠিয়াছে।

 মিস্ চৌধুরীর আবেদন পাইবার পূর্ব্ব হইতেই অমিয়ারই চিঠিতে সত্যবতী রণেন্দ্রের খবর কিছু কিছু