পাতা:শ্রীশ্রীহরি লীলামৃত.djvu/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> s নৌকা বেয়ে এসেছেন লোচন ঠাকুর। ধীরে ধীরে উত্তরিল এসে জয়পুর ॥ বরষায় জলমগ্ন বাড়ীর নিকটে । বসেছে তারক সে বাড়ীর পূর্ব ঘাটে । হরিচাদ রূপ চিন্তা বসিয়াছে এক । হেনকালে গোস্বামী আসিয়া দিল দেখা ৷ তারকে জিজ্ঞাসা করে তারকের কথা । বলহে এখানে তারকের বাড়ী কোথা ॥ গোস্বামীকে দৃষ্টি করি তারক চিনিল। পূৰ্ব্বে একদিন ওঢ়ার্কাদি দেখা ছিল ৷ ওঢ়ার্কাদি শ্ৰীধামে তারক গিয়াছিল। সেদিনে গোস্বামী ধামে উপস্থিত হ’ল ৷ ও হরি ! ও হরি ! বলে গোস্বামীজী ডাকে । মহাপ্রভু ডাক শুনে পরম পুলকে । তাহা শুনি তারক ভাবিল মনে মনে । হেন সুধামাখা ডাক ডাকে কোন জনে ॥ সামান্ত মানুষ না হইবে এই জন। ইচ্ছা হয় সেবা করি যুগল চরণ ॥ বাহির বাটীতে বসি ভাবিতেছে তাই। নিকটে আসিয়া তবে জিজ্ঞাসে গোসাই ॥ এখানে বসিয়া বাপ ! কি ভাবিছ মনে । বল শুনি তোমার বসতি কোন খানে ॥ বিনয় তারক কহে শুনহে ঠাকুর। তারক আমার নাম বাড়ী জয়পুর ॥ গোসাই বলেন তুমি না ভাবিও আর । ভিক্ষায় যাইয়। থাকি মধুমতী পার। দেশে দেশে যখন মাগিয়া খাই ভিক্ষ । মনন থাকিলে পরে হ’তে পারে দেখা ৷ টুও হাত পদ মোর বেড়াই হাটিয়া । পদের নীচায় কাষ্ঠ পাদুকা বাধিয়া ॥ দুই চারি পদ হাটে ঘুরিয়া ঘুরিয়া। মহাপ্রভু সঙ্গে রঙ্গে কথা কন গিয়া । ডেকে বলে ওহে হরি তুমিত গোসাই। আসিলে তোমার বাড়ী বড় ভাল খাই ॥ সেই জন্য আসি আমি সময় সময়। তোমার বাটীতে বড় ভাল পাক হয়। লক্ষ্মীর হাতের পাক অন্নাদি ব্যঞ্জন। কৃষ্ণের নৈবিদ্য আমি করি যে ভোজন ॥ হরিচাদ প্রভু কন থাক এ বেলায় । কৃষ্ণের নৈবিদ্য যেন তোমা হ’তে হয় ॥ অন্ত খণ্ড । থাকিল লোচন হ’ল ভোজন-সময় । চারিদণ্ড রাত্রিকালে বসিল সেবায় ॥ ঠাকুরে বলেন হুরি । তুমি ও ব’সহ । আমি এই বসিলাম মা তাকে ল লহু ॥ দুই ঘরে দুই প্রভু বসিল সেবায় ॥ উত্তরের ঘরে হরিচাদ দয়াময় ॥ পূৰ্ব্ব ঘরে পীড়ি পরে বসিল লোচন। লক্ষ্মীমাত দেন অন্ন হ’য়েছে রন্ধন ॥ ভোজন করেছে তার বলেছে লোচন । বড়ই সুপক্ক স্বাদু মুতার ব্যঞ্জন ॥ হেন ব্যঞ্জনাদি আমি কোথাও না পাই । • তোমার মন্দিরেতে উদর পুরে খাই ॥ শান্তি মাত ব্যঞ্জন দিলেন দুইবার। তাহা শুনি ব্যঞ্জন দিলেন আরবার ॥ তারবার বলে হরি খাইলাম তাল । কিবা সুব্যঞ্জন মম রসন রসিল ॥ নদীয়ায় শচীস্থত ছিলেন ভিখারী। তার বাড়ী পেটপুরে থাইবারে নারি। গৃহস্থ হয়েছ ভাল হইয়াছে ভাল । মাত ভাল পাক ভাল খাই আমি ভাল ॥ তাহাগুনি মহাপ্রভু লক্ষ্মী মাকে কয় । পুন ব্যঞ্জনাদি দেহ গোস্বামী সেবায়। এইরূপে ব্যঞ্জন লইল পঞ্চ বীর । প্রভু হরিচাদ বলে না লইও আর ॥ তাহাগুনি লোচন ভোজন করে ক্ষান্ত । হননিদ্র জেগে থেকে নিশি করে অন্ত ॥ সে হইতে তারকের বাঞ্ছাছিল মনে । হেন গোস্বামীর সঙ্গ পা’ব কতদিনে ॥ হেন প্রভু তারকের ঘাটেতে উদয় । গলে বস্ত্র কর যোড়ে তারক দাড়ায় ॥ তারক কহিছে প্রভু আমি সে তারক। আপনার দরশনে শরীর পুলক ৷ ঘাটে নৌকা লাগাইল তারক তখনে । আনন্দে গোস্বামী লীয়ে চলিল ভবনে ॥ সে হইতে গোসাই রহিল সপ্ত বর্ষ। পূর্ণানন্দ সদা সবে নাহিক বিমূর্ষ। সময় সময় যাইতেন তান্ত স্থানে । বেশী হ’লে থাকিতেন দুই তিন দিনে ॥ তারকের হ’ত যবে একান্ত মনন । মন বুঝে এসে দেখা দিতেন তপন ॥ ›ዓ6