বনলতা সেন/নক্ষত্রমঙ্গল

উইকিসংকলন থেকে

নক্ষত্রমঙ্গল (১৯৪২-১৯৪৭)

রাতের আঁধার বাড়লে পথে প্রান্তরে কি ঘরে
থামে এসে সারদিনের রীতি।
সার্থবাহ নটীর হিসেব ফুরিয়ে গেলে তবে
হস্তা স্বাতী বিশাখা শতভিষা

যত না প্রিয় বাতির মতন জুলে বলে যেন
তাহার চেয়ে অনেক বেশি স্বীকলরােল করে:
সমস্ত দিন মেঘ ভেঙে কি বৃষ্টি হয়েছিল?
কিংবা অঢেল রক্ত ঝরেছে।

এক পৃথিবীর সন্ততিদের আলােড়নের থেকে?
কালাে মেঘের পিছে আকাশ ছিল কি নীল তবু?
‘জানি না সে সব। হে গুণ, মনপবনে প্রদীপ তারা,
আমার হৃদয় মৃৎশতাব্দীশীল;

তবু হাতের মুখের রক্ত শিশির ঘাসে মুছে
হৃদয় আমি তারকাদের পানে
মানবসময় সরিয়ে আইনস্টাইনি লােক ভেঙে
ছড়িয়ে দিলে দিতাম অনবতুল অনবতুলে;

কী মানে তবু নক্ষত্রদের—প্রেমের প্রতীক যদি
ক্লেদপৃথিবীর পুরুষনারীর থেকে সরে গিয়ে
নিখিলে রেতঃ হয়ে থাকে? মাটি সহজ হয়
ইতিহাসের ক্ষমতাতীত রক্ত খরচ করে?

‘তবুও অর্থ র’য়ে গেছে—সুপরিসর ঢের;
ম্যামথ বা তার পাঁকের থেকে মানুষ এখন জেগে
স্বাতীতারার শিশির দিয়ে যে অনিমেষ গল্প বানিয়েছে
তাই তাে প্রেম: যান নিরূপণ-জ্ঞানের প্রবলতর আবেগে।’