পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 প্রথমে সে প্রশ্ন করিল,—“এই আনারউন্নিসা আমার কে?”

 উত্তর আসিল,—“সম্ভ্রান্ত কুলমহিলা সে। এতদিন সে সোদর জ্ঞানে, তোমায় ভাল বাসিয়া আসিয়াছে। বাল্য ও কিশোরের চঞ্চল প্রেমের কথা তুমি ভুলিয়া যাও। জ়ান তো—আনারের সহিত এক সম্ভ্রান্ত ওমরাহের বিবাহের কথা হইতেছে। তাহার সৌভাগ্যের পথে দাঁড়াইও না। তাহার ভবিষ্যতের উজ্জ্বল ভাগ্যকে, তোমার মর্ম্মভেদী নিরাশার মলিন নিশ্বাসে কলুষিত করিও না। ভালবাসা—ঈশ্বরের দান। সেই প্রেমময়ের পবিত্র প্রেমই, বিভিন্ন পাত্র বিশেষে, বিভিন্ন প্রকারের প্রেম মাধুরীর বিকাশ করে। এ দুনিয়ায় মাতা, পিতা, সুহৃৎ ভগ্নী, পত্নী, সবাইকেই ত লোকে ভালবাসে। যাহারা নিস্বার্থভাবে ভালবাসে, তাহারাই ত ভালবাসিতে জানে। ভালবাসার জন্য যাহারা ভালবাসে, তাহারাই ভালবাসার মহত্ত্বের মর্য্যাদা রাখিতে পারে। যাহা অসম্ভব, তাহার জন্য আশাপূর্ণ হইও না, আশাভঙ্গে ব্যাকুল হইও না। এই না জুম্মাশা তোমায় বুঝাইয়া দিলেন—ত্যাগেই প্রকৃত মহত্ত্ব। আসক্তিতে নয়। অতবড় সাধু যিনি তাঁহার কথা তুমি কি সাহসে অগ্রাহ্য করিতে চাও? হায়! অতি অসার অপদার্থ তুমি!”

 “এ বিশ্ব ত চিরদিনই এক মহা সুরে গাঁথা। চিরদিনই ত শুনিয়া আসিতেছ, যেখানে সুখ— সেইখানেই দুঃখ। যেখানে হাসি—সেইখানেই—অশ্রু। যেখানে ভ্রান্তি—সেইখানে সত্য। যেখানে আলোক—সেই খানেই আঁধার।”

৮৮