পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পাখীর কথা
১০৯

শ্রেণীবিভাগ করিয়া তাহাদের ঔৎসুক্য ও কৌতুহল জাগ্রত করিতে পারি। কিন্তু বৈজ্ঞানিকের দৃষ্টিভঙ্গীর উন্মেষ করিতে হইলে আরও গভীরতর পার্থক্যগুলি বা শ্রেণীবিভাগের মূলসূত্রগুলির প্রতি দৃষ্টি আকৃষ্ট করিতে হইবে।

 এই পুস্তকে আপাতঃ দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বিভিন্ন হইলেও কয়েকটি পাখীকে একই বংশের বলিয়া দুই এক স্থানে উল্লেখ করা হইয়াছে।

 কাণাকূয়া পাখী দেখিতে বেশ বড় একটা দাঁড়কাকের আয়তনের। অনেকে একে কাকের গোত্রসম্ভূত বলিতে কুষ্ঠাবোধ করিবেন না। অথচ আমি ইহাকে কোকিলের মধ্যে স্থান দিয়াছি।

 হাঁড়িচাচার বর্ণবৈচিত্র্য ও দীর্ঘ পুচ্ছ হইতে কে ইহাকে বায়সের জ্ঞাতি বলিয়া সন্দেহ করিবে? অথচ বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগে —উভয়েই এক বংশের।

 ৺জগদানন্দ রায় মহাশয়ের যে পুস্তকের নাম করিয়াছি তাহাতে তিনি এ দেশে দুই রকমের কাঠঠোকরা আছে বলিয়া হুপোর নাম করিয়াছেন ও তাহার ছবি দিয়াছেন। বৈজ্ঞানিকের কাছে কিন্তু ইহারা বিভিন্ন পাখী।

 বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগের জন্য শরীরগঠনের উপর অধিকতর নির্ভর করেন। সুতরাং চোখে দেখিয়া কোনও পাখীর শ্রেণীবিচার করিতে হইলে, সূক্ষ্মদৃষ্টির প্রয়োজন হয়। এই কঠোর বিষয়টির এই পুস্তকে অবতারণা করিবার প্রয়োজন নাই। শ্রেণীবিভাগের মত জটীল বিষয় ছাড়িয়া দিলেও বিহঙ্গ জীবনের এমন কতকগুলি দিক আছে—যাহা অতীব রহস্যময়।

 পাখী ওড়ে কি করিয়া? পাখী গান গায় কি জন্য? পাখীর বর্ণবৈচিত্র্য কি প্রকৃতির খেয়াল মাত্র? পাখীর প্রকৃতি কি সহজাত না শিক্ষানবিশীসাপেক্ষ? পাখীর দাম্পত্যজীবন কোন রীতি বা নীতি