পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খাহা ছিল সব ভাল। কৃষ্ণদাস কবিরাজের ( পঞ্চানন মোক্তার বলেম, কবিরাজ গোস্বামী ) চৈতন্যচরিতামৃত তাহার মতে বাংলা সাহিত্যের শেষ ভাল গ্রন্থ । পঞ্চানন মোক্তার গাৰ্গদ কণ্ঠে বলেন, কী সব ইংরেজী বলেন আপনারা বুঝি না। কিন্তু কবিরাজ গোস্বামীর পর আর বই হয় না। বাংলায় আর বই নাই, লেখা হয় মাই তার পরে— এ রকম লোকের সঙ্গে লেসলি ষ্টিফেন ও মিলের ছাত্র নারাণবাবু কী তর্ক করিবেন । জীবনে তিনি একজন ষাট দার্শনিক দেখিয়াছিলেন—অনুকূলবাবু নিজের জন্য কখনও কিছু করেন নাই, স্কুল গড়িয়া তুলিৰেম মনের মত করিয়া, ভাল শিক্ষা দিবেন তাহার স্কুলে, কলিকাতার মধ্যে একটি আদর্শ বিদ্যালয়ে পরিণত করিবেন স্কুলকে । ইহাকে কেন্দ্র করিয়াই তাহার স্বত কল্পনা, যত আলোচনা—কত বিনিম্র রজী যাপন করিয়াছেন স্কুলের ভবিষ্যৎ ভাৰিয়া ! অমন সাধুপুরুষ জন্মায় না। এই সব তিলক-কষ্টিধারী গোপীভাবে বিভোর লোকের মেরুদণ্ডহীন ব্যক্তিত্বের তুলনায় অল্পকুলবাবু একটা পুরা মাহুৰ। আর এই সাহেবটাও মন্দ নয়, অমুকুলবাবুর মত এও স্কুল বলিতে পাগল। স্কুলের স্বার্থ, ছাত্রদের স্বার্থ সবচেয়ে বড় ওর কাছে। তবে অল্পকৃলবাবু ছিলেন খাটি স্টোইকু আর সাহেব এপিকিউরিয়ান—এই যা তফাত । যা হোক, নারাণবাৰুর ভাল লাগে না—পঞ্চানন মোক্তারকে না, বরিশালের এ পড়িাগ ম। পঞ্চানন ছাড়া গ্রামে আরও অনেক মানুষ আছে বটে, কিন্তু তাহানের সঙ্গে নারাণবাবুর খাপ খায় না। নারাণনাৰু ভাবেন, তাহার ছেলে-ছোকরা, তাহাদের সঙ্গে কী মিশিবেন । তা ছাড়া যাচিয়া তিনি কাহারও সঙ্গে দেখা করিতে যাইবেন না। কলিকাতার লোক, একটু লাজুক ধরনেরও আছেন । একদিন গ্রামের বঁাশুবনে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে খুব বর্ষ নামিয়া বঁাশঝাড়ের রঙ কালে দেখাইতেছে। চারিদিক মেঘে ৰিরিয়াছে গ্রামখানিকে, টারাসাদের ঘন জঙ্গলে বৃষ্টির ধারার শৰ। গ্রামে এক জায়গায় গান-বাজনার মজলিশ হইবে, খুব আগ্রহ লইয়ানারাণবাবু সেখানে গিয়া লেখিলেন-পঞ্চানন মোক্তার, দীনবন্ধু স্তাকর গলায় ত্ৰিকণ্ঠি তুলসীর মালা ঝুলাইয়া মজলিশ জুড়িয়া বসিয়া। আরও অনেক উহাদের শিষ্ম-প্রশিল্প বসিয়া আছে। কিছুক্ষণ পরে কীৰ্ত্তন শুরু হইল, নারাণবাবু চলিয়।আসিলেন–র্তাহার ভুল লাগে না। কীৰ্ত্তন কেন তাহার ভাল লাগে না, ইহা লইয়া পঞ্চানন মোক্তারের সঙ্গে তর্ক করিয়া গীতে-বাংলার প্রধান খান—এমন মধুর রসের জিনিল ষে উপভোগ করিতে না শিখিল, তার প্রবণেফুিই মিথ্যা। - নারাশবাণু বলেন, তিনি বোঝেন না, তাহার ভাল লাগে না-মিটির গেল। ৰে ভাল