পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পলাতকা

অত্যাচারের সুধা-উৎস বন্ধ হয়ে গেল একেবারে;
তাই এ ঘরের প্রাণ
লোটায় ম্রিয়মাণ
জল-পালানো দিঘির পদ্ম যেন।
খাট পালঙ্ক শূন্যে চেয়ে শুধায় শুধু, ‘কেন, নাই সে কেন?’

সবাই তারে দুষ্ট, বলত, ধরত আমার দোষ;
মনে করত, শাসন বিনা বড়ো হলে ঘটাবে আপশোষ।
সমুদ্র-ঢেউ যেমন বাঁধন টুটে
ফেনিয়ে গড়িয়ে গর্জে ছুটে
ফিরে ফিরে ফুলে ফুলে কূলে কূলে দুলে দুলে পড়ে লুটে লুটে
ধরার ঘরাতলে,
দুরন্ত তার দুষ্টমিটি তেমনি বিষম বলে
দিনের মধ্যে সহস্রবার ক’রে
বাপের বক্ষ দিত অসীম চঞ্চলতায় ভ’রে।
বয়সের এই পর্দা-ঘেরা শান্ত ঘরে
আমার মধ্যে একটি সে কোন্ চিরবালক লুকিয়ে খেলা করে,
বিজুর হাতে পেলে নাড়া
সেই-যে দিত সাড়া।
সমান বয়স ছিল আমার কোন্‌খানে তার সনে,
সেইখানে তার সাথি ছিলেম সকল প্রাণে মনে।
আমার বক্ষ সেইখানে এক তালে

৬২