পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আসল

বেসুর শুনে হাসেন তিনি, বুক ভরে সেই হাসির পুরস্কারে।
তিনি জানেন, সুর রয়েছে প্রাণের গভীর তলায়,
বেসুর কেবল পাগলের এই গলায়।’

সকল প্রয়োজনের বাহির সে যে সৃষ্টিছাড়া,
তার ঘরে তাই সকলে পায় সাড়া।
একটা রোগা কুকুর ছিল, নাম ছিল তার ভূতো;
একদা কার ঘরের দাওয়ায় ঢুকে ছিল অনাহুত—
মারের চোটে জরজর
পথের ধারে পড়ে ছিল মরমর;
খোঁড়া কুকুরটারে
বাঁচিয়ে তুলে রাখলে মহেশ আপন ঘরের দ্বারে।
আর-একটি তার পোষ্য ছিল, ডাক-নাম তার সুর্মি,
কেউ জানে না জাত যে কী তার, মুসলমান কি কাহার কিম্বা কুর্মি।
সে বছরে প্রয়াগেতে কুম্ভমেলায় নেয়ে
ফিরে আসতে পথে দেখে, চার বছরের মেয়ে
কেঁদে বেড়ায় বেলা দুপুর দুটোয়।
মা নাকি তার ওলাউঠোয়
মরেছে সেই সকাল বেলায়।
মেয়েটি তাই বিষম ভিড়ের ঠেলায়
পাক খেয়ে সে বেড়াচ্ছিল ভয়েই ভেবাচেকা—
মহেশকে যেই দেখা

৮৩