পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঊর্ম্মিমুখর

বিকেলটা আজ! ঠাণ্ডা অথচ পথঘাট শুকনো খট্‌খট্‌ করচে। মাঠের গাছপালাতে সোনালী রোদ পড়েচে। কুঠার মাঠে যেতে যেতে প্রত্যেক সোদালি গাছ, ঝোপঝাপ, বাশবন আমার মনে গভীর আনন্দের সঞ্চার করচে। নতজামু হয়ে ভগবানের কাছে তাই মনের আনন্দ জানালুম। কুঠার মাঠে ঘাসের ওপর এখনও জল বেধে আছে। কবিরাজ ও গঙ্গাচরণ পথের ধারে মাদুর পেতে বট অশ্বঙ্গের ছায়ায় বসে গল্প করচে। কাপড় কেটে কবিরাজ নিজেই জামা সেলাই করচে। শুক্নে ভেষজ পাতালত কলকাতায় চালান দেবে, তারই মতলব অ্যাটচে। বড় ভাল লাগল বিশেষ করে আজ ওদের গল্পসল্প। আসবার সময় ছাতা নিয়ে এলুম, তখন রাত হয়ে গিয়েচে, আমাদের ঘাটে যখন নাইতে নেমেচি, আকাশে অনেক নক্ষত্র উঠেচে । ক'দিনই মনে কেমন একটা অপূৰ্ব্ব আনন্দ। বিশেষ করে যখনই কুঠার মাঠে যাবার সময় হয়, তখনই সেটা বিশেষ করে হয়। কাল যখন বিকেলে ঘন নীলকৃষ্ণ মেঘ করল, তার কোলে বক উড়ল, তখন আমি সেদিকে চেয়ে এক জায়গায় বসে আছি। আবার যখন পুলের রেলিং ধরে উঠে দাড়াই অস্ত আকাশের পটভূমি সবুজ বাশবনের দিকে চেয়ে থাকি, তখন আমি যেন শত যুগজীবী অমর আত্মা হয়ে যাই—সেদিন যেমন হয়েছিল, আজও তাই ছোল । বেলেডাঙার ওদিকের মোড় থেকে চক্রাকৃতি শ্বিলয়লীন শ্যাম ৰেণুবনের অপূৰ্ব্ব শোভায় মেধসর আকাশতলে মন এক অপূৰ্ব্ব আননে উৎফুল্ল হয়ে উঠল। যখন এই শুকনো মরগাঙে আবার ইছামতী বইবে, তখন আমি কোন নক্ষত্রে রইবো–কত কাল পরে—কে জানে সে খুব ? বাবলার সোনালী ফুল দোলানো গাছের তলা দিয়ে সেই পথ। ভাবতে ভাবতে চলে এলুম। পুলের ওপর খানিকটা দাড়াই। সেই কত কালের প্রাচীন বট অশ্বথ, কত কালের আইনদি মগুলের বাড়ী ও বাশবনের সারি। মনে এ কয়দিনই সেই অপূৰ্ব্ব অনুভূতিটা আছে। পুলের পাশে একটা হেলা বাবলা গাছে ফুলের কি বাহার! যখন নদীর ঘাটে এসে নামনু স্নান করতে তখন অন্ধকার ছয়ে গিয়েচে । মেঘাচ্ছন্ন আকাশে "শুধু বৃশ্চিকের একটা নক্ষত্র