পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী জিজ্ঞাসা করিলেন, কী, কী, কী রকম ? ক্ষেত্রবাবুর বউদিদি খিল খিল করিয়া হাসিয়া উঠিয়া বলিলেন, তবে নাকি ঠাকুরপোর মন নেই? আমাদের কাছে চালাকি ? সত্যি তা হলে ভাল লেগেছে ? তবে আমিও বলছি শোন, অনিলা তোমাকে দেখতেই এসেছিল আসলে। অবিপ্তি ছুতো করে এসেছিল। আমি যেন কিছু বুঝি নি, এই ভাবে বললাম, কলকাতা থেকে আমাদের একজন আত্মীয় এসেছে, বাইরে বসে আছে, চা-টা দিয়ে এল—ভাতটা দিয়ে এস। এক পারছিনে। তাই ও গিয়েছিল। বার বার পাঠালে ভাল হয়, এমনি মনে হল। আজকালকার সব বড়সড় মেয়ে। ওদের ধরনই আলাদা। যেয়ো কিন্তু । রাত্রে সেই মেয়েটিই ক্ষেত্রবাবুদের পরিবেষণ করিল। কিন্তু করিলে কী হইবে, দাদা পাশেই বসিয়া। ক্ষেত্রবাবু লজ্জায় মুখ তুলিয়। চাহিতেও পারিলেন না। খাওয়াদাওয়া মিটিয়া গেল । ছোট রেলওয়ে-কোয়ার্টারের বাহিরের ঘরে ক্ষুদ্র তত্তোপোশে শতরঞ্জির উপর ক্ষেত্রবাৰু আসিয়া বসিলেন। বাড়ির কৰ্ত্ত হঠাৎ ক্ষেত্রবাবুর দাদাকে কোথায় ডাকিয়া লইয়া গেলেন । অল্প পরেই সেই মেয়েটি একটা চায়ের পিরিচে চারটি পান আনিয়া তক্তাপোশের এক কোণে রাখিল। ক্ষেত্রবাবু একটা বিস্ময়ের ভান করিয়া বলিলেন, ও, এটা আপনাদের বাসা ? আমি প্রথমটা বুঝতে পারি নি— মেয়েটি চুপ করিয়া রহিল। কিন্তু চলিয়া গেল না। ক্ষেত্রবাবু আর কথা খুঁজিয়া পান না। মেয়েটি যখন সামনেই দাড়াইয়া, তখন বেশীক্ষণ চুপ করিয়া থাকিলে বড় খারাপ দেখায়। চট করিয়া মাথায় কিছু আসেও না ছাই। তখন যে কথাটা আজ দুই দিন হইতে মনে হইতেছে প্রায় সব সময়েই, সেটাই বলিলেন, রেলের বাসাগুলো বড় ছোট, না ? -ईश" | - —এতে আপনাদের অস্ববিধে হয় না ? —আমাদের অভ্যেস' হয়ে গিয়েছে। এই তো রেলে রেলেই বেড়াচ্ছি কতদিন থেকে —ও সয়ে গিয়েছে । জ্ঞান হয়ে পৰ্য্যস্ত এই রকমই দেখছি। —এর আগে কোথায় ছিলেন আপনার ? —আসানসোলে। তার আগে পাকুড় । তার আগে ছিলাম সক্রিগলি জংশন। তখন আমার বয়স সাত বছর, কিন্তু সব মনে আছে আমার – মেয়েটি বেশ সহজ স্বরেই কথা বলিতে লাগিল, যেন ক্ষেত্রবাবুর সঙ্গে তার অনেক দিনের পরিচয় । —আচ্ছা আপনাদের দেশ কোথায় ? • —হুগলী জেলায় আরামবাগ সাব-ডিভিশনে । কিন্তু সে বাড়ীতে আমরা যাই নি কোনদিন। রেলের চাকরিতে ছুটি পান না বাবা। আমার ভাইয়ের পৈতের সময় বাবা বলেছেন যাবেন r