পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবর্তন ক্ষেত্রবাৰু পিছন ফিরিয়া চাহিলেন, একটি স্ববেশ তরুণ যুবক। বেশ দামী স্কট পরনে, চোখে কাচকড়ার চশমা ! মুছ হাসিয়া বলিল, চিনতে পারছেন না স্তাৱ ? —না, কষ্ট, ঠিক—তুমি আমাদের স্কুলের ? —ষ্ঠা, স্তার। অনেক দিন আগে, এগার বছর আগে-পাশ করি। আমার নাম সুরেশ । —মুরেশ বস্ব ? —ন স্তার, স্বরেশ মুখাঙ্গি, সেবার সেই সরস্বতীপুজোর সময়ে আমাদের বারে ভাড়াব লুঠ করে ছেলেরা, মনে আছে ? হেডমাস্টার ফাইন করেছিলেন সব ছেলেদের। মনে হচ্ছে স্তার ? —ধ্য, একটু একটু মনে হচ্ছে ধেন। তোমাদের ছেলেবেলার কপী হিসেবে এসব যত মনে থাকে আমাদের তত্ত মনে রাখলার ব্যাপার নয় বাবা । বুঝতেই পারচ ! কী কব এখন ? -আজ্ঞে স্যার, রাচিতে চাকরি করি, এঞ্জিনীয়ার। —ইঞ্জিনীয়ারিং পাশ করেছিলে বুঝি বাবা ? —আঞ্জে, শিবপুর থেকে পাশ করে বিলেতে যাই। আজ তিন বছর বিলেত থেকে ফিরে গভৰ্মেণ্ট সাভিস করছি রাচিতে—পি. ডবলিউ. ডি.-তে য়্যালিস্ট্যাণ্ট এঞ্জিনীয়ার। —কী নাম বললে, স্বরেশ মুখাজি ? এখন চেনা-চেনা মুখ বলে মনে হচ্ছে। অনেক দিনের কথা—আর কত ছেলে আসে-যায়, কাজেই সব মনে রাখা— —নিশ্চয় স্তার, ঠিক কথা। পুরোনো মাস্টারদের মধ্যে কে কে আছেন কার, ? যন্ধুবাবু আছেন ? —ধ্যা, ঐশবাৰু, থার্ড পণ্ডিত আছেন, নারাণবাৰু আছেন— —নারাণবাবু আজও আছেন স্তার, । উ, অনেক বয়স, হল তার । তিনি কি স্কুলের সেই ঘরেই থাকেন—আচ্ছা, একবার দেখা করে আসব বড় ইচ্ছে হয়। চাকরটা আছে ? কেবলরাম । —ই্যা, আছে বইকি। যেও না একদিন স্কুলে। যুবকটি পায়ের ধূলা লইয়া প্ৰণাম করিয়া চলিয়া গেল। ক্ষেত্রবাবু সগর্বে একবার চারিদিকে চাহিলেন—লোকে দেখুক, এমন একজন স্কটপরা তরুণ যুবক তাহার পায়ের ধূলা লইতেছে। তাহাকে বেশ স্বন্দর দেখিতে, সাহেবের মত চেহারা। কবে হয়তো ইহাকে পড়াইয়াছিলেন মনে নাই, তবুও তো তাহীদের স্কুলের ছাত্র। আজ ছু পয়সা করিয়া খাইতেছে। বিলাত-ফেরত য়্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনীয়ার-এরকম হয়তো কত ছাত্র কত দিকে আছে, সকলের সদ্ধান তো জানা নাই । - এইটুকু ভাবিয়াই মুখ। এই ছাত্রের দল তাহাদের বাল্যজীবনের শত মুখস্থতির আধার তাহাঙ্গের স্কুল ও স্থলের শিক্ষকদের ভুলে নাই ; কেহ আছে বৰ্খায়, কেহ আছে সিমলায়