অনুবাদ কবিতা/দামিনীর আঁখি কিবা
দামিনীর আঁখি কিবা
ধরে জ্বল ' জ্বল ' বিভা
কার তরে জ্বলিতেছে কেবা তাহা জানিবে ?
চারি দিকে খর ধার
বাণ ছুটিতেছে তার
কার- ‘ পরে লক্ষ্য তার কেবা অনুমানিবে ?
তার চেয়ে নলিনীর আঁখিপানে চাহিতে
কত ভালো লাগে তাহা কে পারিবে কহিতে ?
সদা তার আঁখি দুটি
নিচু পাতে আছে ফুটি ,
সে আঁখি দেখে নি কেহ উঁচু পানে তুলিতে!
যদি বা সে ভুলে কভু চায় কারো আননে ,
সহসা লাগিয়া জ্যোতি
সে-জন বিস্ময়ে অতি
চমকিয়া উঠে যেন স্বরগের কিরণে!
ও আমার নলিনী লো , লাজমাখা নলিনী ,
অনেকেরি আঁখি- ‘ পরে
সৌন্দর্য বিরাজ করে ,
তোর আঁখি- ‘ পরে প্রেম নলিনী লো নলিনী!
দামিনীর দেহে রয়
বসন কনকময়
সে বসন অপসরী সৃজিয়াছে যতনে ,
যে গঠন যেই স্থান
প্রকৃতি করেছে দান
সে-সকল ফেলিয়াছে ঢাকিয়া সে বসনে ।
নলিনী বসন পানে দেখ দেখি চাহিয়া
তার চেয়ে কত ভালো কে পারিবে কহিয়া ?
শিথিল অঞ্চল তার
ওই দেখো চারি ধার
স্বাধীন বায়ুর মতো উড়িতেছে বিমানে ,
যেথা যে গঠন আছে
পূর্ণ ভাবে বিকাশিছে
যেখানে যা উঁচু নিচু প্রকৃতির বিধানে!
ও আমার নলিনী লো , সুকোমলা নলিনী
মধুর রূপের ভাস
তাই প্রকৃতির বাস ,
সেই বাস তোর দেহে নলিনী লো নলিনী!
দামিনীর মুখ-আগে
সদা রসিকতা জাগে ,
চারি ধারে জ্বলিতেছে খরধার বাণ সে ,
কিন্তু কে বলিতে পারে
শুধু সে কি ধাঁধিবারে ,
নহে তা কি খর ধারে বিঁধিবারি মানসে ?
কিন্তু নলিনীর মনে
মাথা রাখি সঙ্গোপনে
ঘুমায়ে রয়েছে কিবা প্রণয়ের দেবতা ।
সুকোমল সে শয্যার
অতি যা কঠিন ধার
দলিত গোলাপ তাও আর কিছু নহে তা!
ও আমার নলিনী লো , বিনয়িনী নলিনী
রসিকতা তীব্র অতি
নাই তার এত জ্যোতি
তোমার নয়নে যত নলিনী লো নলিনী ।
Thomas Moore
অনুবাদকবিতা