বিষয়বস্তুতে চলুন

অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড)/অধ্যায়: পাঁচ

উইকিসংকলন থেকে


অধ্যায়: পাঁচ

সমব্যথী চিহ্নের মহাপুরুষ

বিভিন্ন শতাব্দীতে এমন অনেক ‘stigmatist’ বা সমব্যথী ক্ষতচিহ্নধারী’র কথা জানা গেছে। তাঁদের অনেকেই ধর্মীয় সমাজে অলৌকিক মহিমায় মণ্ডিত হয়েছেন।

 কোনেরশ্রুত-এর থেরেসা নিউম্যান (Theresa Neuman of Konnersreuth) তাঁর Stigmatisation বা সমব্যথী ক্ষতচিহ্নের জন্য বিশ্বজুড়ে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছিলেন। থেরেসা নিউম্যান জন্মেছিলেন ১৮৯৮-এর গুড ফ্রাইডের দিন, মৃত্যু ১৯৬২ সালে। ১৯২৬-এর ২ এপ্রিল থেরেসার হাত-পা থেকে প্রথম রক্ত ঝরতে নাকি দেখা যায়। তারপর প্রতি বছরই গুড ফ্রাইডেতেই থেরেসার হাত-পা থেকে ঝরতে লাগল রক্ত। যিশুর সঙ্গে একাত্মতার ফলেই যে এই রক্তপাত এই বিষয়ে ভক্তজনের কোন দ্বিমত ছিল না। থেরেসা এই সমব্যথী-চিহ্ন ‘আত্ম-সম্মোহন’ ও ‘স্ব-ধারণা সঞ্চার’ (auto-suggestion)-এর সাহায্যে সৃষ্টি করতেন না। তিনি এর জন্য চতুরতার আশ্রয় নিতেন। তাঁর এই জালিয়াতি শেষপর্যন্ত ধরা পড়ে।

 ইতালিয়ান অন্ধ-ধর্মবিশ্বাসী গোম্মা গ্যালভানির হাতে-পায়েও এমনি পবিত্র সমব্যথী-চিহ্ন ফুটে উঠত। তাই নিয়ে ইউরোপে প্রচুর উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। গোম্মা গ্যালভানি জন্মেছিলেন ১৮৭৮ সালে, মৃত্যু ১৯০৩ সালে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে অভিমত প্রকাশ করেন যে, গোম্মা আত্ম-সম্মোহন (autosuggestion) ও হিস্টিরিয়াগ্রস্ত (hustrrico epileptic fits) অবস্থায় নিজেই নিজের শরীরে নিজেই ক্ষতের সৃষ্টি করতেন।

 সমব্যথী চিহ্নের জন্য শ্রীরামকৃষ্ণদেবের নাম উল্লেখ করা দরকার। শোনা যায়, একবার রামকৃষ্ণদেবের নিষেধ সত্ত্বেও একজন আর একজনকে মেরেছিল। সেই মারে রামকৃষ্ণদেব এতই সমব্যথী হয়েছিলেন যে, তাঁর পিঠেও আঘাত-চিহ্ন ফুটে ওঠে।

 বস্তুবাদী মনস্তত্ত্ববিদ মাত্রেই আমার সুরে সুর মিলিয়ে বলবেন, যদি ঘটনাটা ঘটেও থাকে, তবু এর মধ্যে অলৌকিক কিছু নেই। রামকৃষ্ণদেব গভীর সংবেদনশীলতার (auto-ensetiveness) জন্যেই আত্ম-সম্মোহনের দ্বারা ও স্ব-ধারণা সঞ্চারের (auto-suggestion} দ্বারা এমনটা ঘটাতে পেরেছিলেন। এই ঘটনার মধ্যে অস্বাভাবিকতা থাকতে পারে, কিন্তু অলৌকিকতা নেই। অর্থাৎ, সকলের পক্ষেই এমনটা ঘটানো সম্ভব নয় বটে, কিন্তু কিছু কিছু মানুষের বিশেষ শারীরিক ও মস্তিষ্কের গঠনের জন্য auto-suggestion-এর দ্বারা এই ধরনের ঘটনা তাদের পক্ষে ঘটানো সম্ভব।

 ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবনেও নাকি এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল বলে তার জীবনী গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়। একবার অনুকূলচন্দ্র কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন ঘোড়ার গাড়িতে। সহিস ঘোড়াকে চাবুক মারে চাবুকের দাগ ফুটে উঠেছিল অনুকূলচন্দ্রের গায়ে।


 মনোরোগ চিকিৎসক ডাঃ ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা পাভলভ পরিচিতি, ২য় পর্ব, ২য় খণ্ড, পৃঃ ১০৭-এ একটি মেয়ের কথা পাওয়া যায়। মেয়েটির নাম অঞ্জনা। নিটোল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ১৯-২০ বছরের মেয়ে। বিয়ের বছরখানেক পর থেকেই দেখা দিয়েছে দাঁতে ব্যথা, সেইসঙ্গে বাঁ পা’টায় অসাড়তা। মাঝে-মধ্যে ডান দিকে তলপেটে তীব্র যন্ত্রণা হয়।

 দাঁতের ডাক্তার, নিউরোলজিস্ট ও আরও কিছু ডাক্তার পরীক্ষা করেছেন। কেউই উপসর্গগুলোর কারণ খুঁজে পাননি।

 শেষ পর্যন্ত কারণ খুঁজে পেয়েছিলেন ডাক্তার গঙ্গোপাধ্যায়। বিয়ের আগে মেয়েটি একজন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত। শিক্ষকের নাম বঙ্কিমবাবু। বয়েসে অঞ্জনার দ্বিগুণ, বিবাহিত ও সন্তানের পিতা। তবু মেয়েটি বঙ্কিমবাবুর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। বাড়ির লোকেরা বোধহয় কিছুটা সন্দেহ করেছিলেন, তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেন। অঞ্জনা প্রথমটায় বিয়েতে মত দেয়নি। কিন্তু, খুবই বিস্মিত হল ও দুঃখ পেল যখন দেখল তার মাস্টারমশাইও অঞ্জনার এই বিয়েতে আগ্রহী।

 অভিমানে অঞ্জনা বিয়েতে রাজি হলো বটে, কিন্তু মনে চিন্তার বোঝা রয়ে গেল, এবার থেকে মাস্টারমশাই দাঁতের ব্যথায় কষ্ট পেলে সে খবরও পাবে না। মাস্টারমশাইয়ের বাঁ পায়ে মাঝে-মাঝে একটা অসাড়তা দেখা দেয়, যখন অসাড়তায় মাস্টারমশাই কষ্ট পাবেন তখন সে থাকবে অনেক অনেক দূরে, সামান্য সহানুভূতিটুকু জানানোরও সুযোগ পাবে না।

 বিয়ের দিন পায়ের ব্যথায় বঙ্কিমবাবু অঞ্জনাকে দেখতে আসতে পারলেন না। বিয়ের পর থেকেই অঞ্জনার দেখা দিল দাঁতে ব্যথা ও বাঁ পায়ের অসাড়তা। অঞ্জনার স্বামীর মাঝে-মধ্যে ডান দিকের তলপেটে খুব ব্যথা হয়। অঞ্জনারও মাঝে-মধ্যে শুরু হয়ে গেল ডান তলপেটে ব্যথা। এই সবগুলোই সমব্যথী-চিহ্নের ঘটনা। অঞ্জনা অবচেতন auto-suggestion-এর সাহায্যে মাস্টারমশাই ও স্বামীর রোগ-উপসর্গগুলো নিজের দেহেও প্রকাশ করত।

 মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ সম্বন্ধে অজ্ঞতার ফলে অনেকেই এই ধরনের সমব্যথী-চিহ্নের বা ‘Stigmatisation’ সৃষ্টিকারীকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বলে ধরে নেন। মনোবিজ্ঞানীরা অবশ্য এই ঘটনার মধ্যে খুঁজে পান abnormal psychology বা অস্বাভাবিক মনস্তত্ত্ব। তাঁরা মনে করেন, সমব্যথী-চিহ্নের ঘটনাগুলো অস্বাভাবিক হলেও আদৌ অলৌকিক নয়। অর্থাৎ, সব মানুষের ক্ষেত্রে সম্ভব না হলেও কিছুকিছু মানুষের শরীর-কাঠামোয় ও বিশেষ মস্তিষ্ক-কোষের জন্য এমনটা ঘটা সম্ভব।

 V Bekhterev, I. Tsctorch ও V, Myasichov বিশ শতকের এই তিন বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করেন যে, হিপনোটিক-সাজেশনের দ্বারা শরীরের কিছু কিছু অংশে রক্তচাপ প্রচণ্ডভাবে বাড়িয়ে রক্তবাহী শিরা (capillary} ফাটিয়ে রক্তপাত ঘটানো সম্ভব।

 বিশ্ববিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী R. L. Moody এই ধরনের একটি ঘটনা তাঁর The Lancet 1948;1 গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন (পৃষ্ঠা ৯৬৪)। তার এক রোগিণীকে শৈশবে তাঁর বাবা-মায়ের কেউ একজন চাবুক দিয়ে ভীষণ মেরেছিলেন। বড় হয়েও মহিলাটি ওই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ভুলতে পারেননি। তাঁর স্মৃতিতে ঘটনাটা এমনই গভীরভাবে দাগ কেটেছিল যে, ওই ঘটনার কথা গভীরভাবে মনে করলে মহিলাটির মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলো শৈশবের বীভৎস সময়টির অবস্থায় ফিরে যেত এবং শৈশবে শরীরে যে সব জায়গায় চাবুকের তীব্র আঘাত পড়েছিল সেইসব জায়গাগুলো লাল হয়ে ফুলে উঠত, এমন কী ওই জায়গাগুলো থেকে রক্তও ঝরত।

 এই ধরনের সমব্যথী ঘটনা সকলের ক্ষেত্রে না ঘটলেও কোনও কোনও হিস্টিরিয়া ও মৃগী রোগীদের ক্ষেত্রে ঘটতে পারে, বিশেষ করে যদি তাদের রক্তবাহী সরু নালীগুলো (capillary) খুব পলকা (fragile) হয়। এইসব ঘটনা এক ধরনের pathological ক্রিয়া। নিজের মস্তিষ্কে নির্দেশ পাঠিয়ে (auto-suggestion) এই ধরনের ঘটনা ঘটানো সবক্ষেত্রে সম্ভব না হলেও কিছুকিছু ক্ষেত্রে সম্ভব। এই প্রসঙ্গে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী প্লাটানভ-এর (Platanov) The world as a Physiological & Therapeutic Factor: 1959, পৃষ্ঠা ১৯০-এ বলছেন, the literature on suggestion & hyposis contains numerous indications of the possibility of influencing the activity of the heart, the state of the cardiovascular system and in particular of the possibility of influencing changes in the state of the vasomotor centre by verbal suggestion.

 এবার যে ঘটনাটি বলছি, সেটা ঘটেছিল এই কলকাতাতে। মনোরোগ চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে স্বর বন্ধ হওয়া একটি রোগী এসেছিল আজ থেকে প্রায় বছর পঁয়তিরিশ আগে। কথা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে বলা চলে না, বহু কষ্টে ফিসফিস করে কথা বলতে পারে। রোগীটি ফুসফুসের যক্ষ্মা রোগে ভুগছিল। ডাঃ গাঙ্গুলি দেখলেন বিশেষজ্ঞের অভিমত functional paralysis of vocal chord। এই স্বর প্রথম যখন বন্ধ হয় তখন রোগীর ফ্রেনিক নার্ভ-এর ওপর অপারেশন চলছিল। বোঝা যায় ভয়ই এই অসাড়তার কারণ।

 স্বরের সাড় ফিরিয়ে দেওয়ার সম্মোহন-চিকিৎসা চালাতে গিয়ে ডাঃ গাঙ্গুলি আর এক সত্যকে আবিষ্কার করলেন, সেই সত্যের দিকেই আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 রোগীটি ছিল পূর্ববঙ্গের এক বড় ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় পক্ষের শেষ সন্তান। ’৪৬ -এর দাঙ্গার পর ব্যবসা বেশ পড়ে যায়। এই সময় বাবা মারা যান। বৈমাত্রেয় ভাইয়েরা ওকে আলাদা করে দেয়। কয়েক হাজার টাকা ও বিধবা মাকে নিয়ে আলাদা সংসার পাতলেও টাকাগুলোকে ঠিক কেমনভাবে ব্যবসায় খাটানো উচিত। ষোল বছরের বালক ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। মায়ের পীড়াপীড়িতে বিয়েও করে ফেলে। মা আর বউকে দেশে রেখে সামান্য যা পুঁজি ছিল তাই নিয়ে এসে হাজির হয় কলকাতায়। কলকাতায় এসে ব্যবসা করতে গিয়ে প্রায় সব পুঁজিই লোকসান দিল। দূর-সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাসায় এসে ওঠে। সেখানে জোটে শুধু অনাদর। এখানেই একদিন ফুসফুসের যক্ষ্মা রোগ ধরা পড়ল। অনেক তদ্বিরের পর বেসরকারি হাসপাতালে জায়গা পেলেও সঞ্চয়ের শেষ তলানিটুকু এখানেই শেষ হয়ে যায়।

 চিকিৎসায় রোগী ভাল হয়। রোগীর দাদারা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গেই আছে শুনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওর দাদাদের চিঠি দেয়। কোন উত্তর আসে না। তিন তিনখানা চিঠি দিয়েও জবাব না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে জানিয়ে দেন, সুস্থকে আর হাসপাতালে রাখা সম্ভব নয়, এবার বেড় খালি করতে হবে। পরদিনই দেখা যায় সুস্থ মানুষটি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গায়ে জ্বর, সঙ্গে কাশি। কয়েকদিন পর এক্স-রে করে দেখা গেল ফুসফুসে আবার ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।

 এবার রোগীটির স্থান হলো সরকারি উদ্বাস্তু হাসপাতালে। এখানে একটা অদ্ভুত জিনিস লক্ষ্য করা গেল। বার-বারই রোগী চিকিৎসার দ্বারা সুস্থ হয়ে উঠছে এবং বেড খালি করে দেওয়ার কথা বলার পরই দেখা যাচ্ছে আবার ফুসফুসের পুরনো ক্ষত সক্রিয় হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় অপারেশন করতে গিয়েই এই স্বর নিয়ে বিপত্তি।

 ডাঃ ধীরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলি বুঝেছিলেন রোগীর জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে অসহায়তা ও আশ্রয়হীনতার মানসিকতা কাটিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে না আনতে পারলে, মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের সহনশীলতা না বাড়াতে পারলে, শুধুমাত্র সম্মোহন-চিকিৎসায় ভাল ফল পাওয়া যাবে না। রোগ মুক্তির পর হাসপাতালের নিশ্চিত আশ্রয় থেকে অনিশ্চিত জীবন সংগ্রামের পথে নামতে হবে ভাবলেই রোগর উপসর্গগুলো আবার হাজির হয়, সৃষ্টি হয় ক্ষত। অনিশ্চয়তার কারণ দুর না করলে রোগের পুনঃ আক্রমণের সম্ভাবনা দূর হবে না। সম্মোহন-চিকিৎসার শেষে রোগীর একটা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, ছোট একটা সরকারি কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিল। ফল পাওয়া গিয়েছিল হাতে হাতে। রোগী তার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছিল।

 প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যুদ্ধরত সৈনিকদের মধ্যে হিস্টিরিক-অন্ধত্ব ও স্মৃতিভ্রংশের অনেক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এদের প্রতিটি অন্ধত্ব ও স্মৃতিভ্রংশ বহিরাগত কোনও কারণে হয়নি, হয়েছে মস্তিষ্ক-কোষের জন্য। ওদের অবচেতন মন রক্ত দেখতে চাইছে না। হত্যার বীভৎস স্মৃতি ধরে রাখতে চাইছে না। এই না চাওয়ার তীব্র আকুতি থেকেই দৃষ্টি হারিয়েছে, স্মৃতি হারিয়েছে।

 আঘাতে যে বেশি ভয় পায়, তার ব্যথা বেশি লাগে ও রক্তপাত বেশি হয়। অপারেশনের ক্ষেত্রেও ভয় পেলে ব্যথা ও রক্তপাত বাড়ে। যে রোগী আপ্রাণ বাঁচতে চায় তার আরোগ্য দ্রুততর হয়। আবার, শুধু চিন্তার প্রভাবেই ঘা সৃষ্টি হতে পারে। উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার জন্যে পেটে অত্যধিক অ্যাসিড নিঃসৃত হয়। দীর্ঘকাল এই রকম চলতে থাকলে ঘা তৈরি হয় ও রক্তক্ষরণ হয়। গ্যাসট্রিক আলসার, কোলাইটিস ও কিছু ক্যান্সার কেবলমাত্র মানসিক কারণেই হয়ে থাকে। ভয় পাওয়া যদিও মানসিক ব্যাপার, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে শরীরে তার বিরাট প্রভাব পড়ে। ভয়ে মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায়, শরীর ঘামে, অনেক সময় পায়খানা বা প্রস্রাবের বেগ দেখা যায়। রাগ হলে রক্তচাপ বাড়ে, চোখ-মুখ রক্তাভ হয়ে ওঠে।

মস্তিষ্কের বিশেষ গঠন-বৈশিষ্ট্যের অধিকারী বা হিস্টিরিয়া
রোগীরা বিভিন্ন ধরনের অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার এবং
সংবেদনশীলতার জন্য প্রায় সব ক্ষেত্রেই নিজের
অজান্তে স্বনির্দেশ (auto-suggestion)
পাঠিয়ে ‘সমব্যথী-চিহ্ন’ বা ওই জাতীয়
অস্বাভাবিক সব কাণ্ডকারখানা
ঘটিয়ে ফেলেন।