আজাদী সৈনিকের ডায়েরী/কর্ণেল গিল্ ও মোহন সিং-এর গ্রেপ্তার
৮ই ডিসেম্বর ১৯৪২:
আজ জাপানীরা কর্ণেল এন্, এস, গিল্কে গ্রেপ্তার করিয়াছে; কারণ বার্মায় সৈন্য প্রেরণে অসম্মতি।
রাসবিহারী বসুর চেষ্টা ব্যর্থ হইল। তিনি টোকিও গিয়া এ সম্বন্ধে ব্যবস্থা করিবেন এবং জাপানীদের স্পষ্ট নীতি জাপ গভর্ণমেণ্টের নিকট হইতে দাবি করিবেন।
রাসবিহারী বসু ও মোহন সিংএর মধ্যেও গোলযোগ আরম্ভ হইয়াছে। রাসবিহারী বসু ও রাঘব প্রভৃতি বেসামরিক নেতারা চাহেন আজাদ হিন্দ্ ফৌজ আজাদ হিন্দ্ সঙ্ঘের সম্পূর্ণ অধীন থাকে। গত জুন মাসে ব্যাঙ্কক সম্মিলনে মোহন সিংএর উপর ফৌজের ভার দেওয়া হয়। সঙ্ঘই যখন মূল প্রতিষ্ঠান তখন ফৌজ তাহার অধীনে থাকা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু মোহন সিং চাহেন সম্পূর্ণ স্বাধীনতা।
৯ই ডিসেম্বর ১৯৪২:
আজ মোহন সিং তাঁহার বাংলোয় অফিসারদের আহ্বান করিয়াছেন। তিনি বলিলেন—ব্যাঙ্কক সম্মেলনের প্রস্তাবগুলি জাপ গভর্ণমেণ্ট্ এখনো অনুমোদন করেন নাই। স্থানীয় জাপ কর্ত্তৃপক্ষের আচরণও আশাজনক নয়। তাহা ছাড়া তাঁহার মতে আজাদ হিন্দ্ ফৌজ ইণ্ডিয়ান্ ইণ্ডিপেণ্ডেন্স লীগের অধীনে হওয়া অসুবিধাজনক।
২২শে ডিসেম্বর ১৯৪২:
আজ টোকিও রেডিওতে শুনিলাম—জাপানী এরোপ্লেন কলিকাতার ডক অঞ্চলে ও বজবজে পেট্রলের ট্যাঙ্কের উপর বোমা ফেলিয়াছে।
এবার ভারতবর্ষের পালা।
২৯শে ডিসেম্বর ১৯৪২:
এই কয়দিনে অনেকগুলি ঘটনা হইয়াছে। জি-ও-সি মোহন সিং এবং আরও দুইজনকে জাপানীরা গ্রেপ্তার করিয়াছে। সৈনিকদের মধ্যে খুব অসন্তোষ চলিয়াছে এবং অনেকেই তাহাদের ব্যাজ্ ফেরত দিয়াছে। আই-এন্-এ প্রায় ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। ভারতবাসীমাত্রেই দুঃখিত। গোলযোগের সংবাদ পাইয়া রাসবিহারী বসু আসিয়াছেন। কর্ণেল ইওয়াকুরুর সঙ্গে তাঁহার নাকি অনেকক্ষণ কথা হইয়াছে। কর্ণেল শা নওয়াজও তাঁহার সহিত ছিলেন।