আজাদী সৈনিকের ডায়েরী/প্যিনবিনের পথে যুদ্ধ

উইকিসংকলন থেকে

১৪ই মার্চ্ ১৯৪৫: প্যিন্‌বিনের দিকে।

 আজ কর্ণেল সেহগল দুই কোম্পানি সিপাহী লইয়া প্যিনবিন্ আক্রমণ করিতে চলিয়াছেন। যাত্রার পূর্বে কর্ণেল শাহ নওয়াজ বলিলেন—

 ‘আপনাদের ২ নং রেজিমেণ্ট, এই প্রথম শত্রুর সহিত সংঘর্ষে চলিয়াছে। সকলের দৃষ্টি আপনাদের উপর নিবদ্ধ থাকিবে। গত বৎসরের অভিজ্ঞতা হইতে দেখা গিয়াছে আমাদের বিপক্ষ ভীরু। আমি আশা করি যে ভারতমাতার সুনামে আপনার কলঙ্ক আনিবেন না। আমাদের শুভ কামনা আপনাদের সঙ্গে থাকিবে।’


 দুইটি সেনাদল ম্যেনে পৌঁছিবার পর, উহার একদল আক্রমণের জন্য তৌঙ্গনের পশ্চিমে প্রেরিত হইল। আর একদল শক্রর দৃষ্টি আকর্ষণ করিবার উদ্দেশ্যে যাত্রা করিল। এই দল যখন তৌঙ্গনের্ পূর্বে পৌঁছিল তখন হঠাৎ আমাদের উপর বোমা ও গুলি বর্ষণ করিতে আরম্ভ করিল। আমাদের সঙ্গে একদল জাপানী সৈন্য ছিল। আক্রমণ হইতেই তাহারা পলায়ন করিল। আমাদের নিষেধ তাহারা শুনিল না। আমরা পাল্‌টা গুলি চালাইলাম। ইহাতে শত্রু দ্রুতগতিতে স্থান ত্যাগ করিয়া সরিয়া পড়িল। আমাদের উপর আদেশ ছিল প্রধান বাহিনীর দিক হইতে শক্রর দৃষ্টি বিভ্রান্ত করা; সুতরাং আমরা তাহাদের পশ্চাদনুসরণ যুক্তিযুক্ত মনে করিলাম না।

 মুহম্মদ হুসেন্ ইংরেজ পক্ষে যোগদানের জন্য চেষ্টা করিয়াছিল; সে আরও কয়েকজনকে দলে টানিতে চেষ্টা করে। হুসেন দোষ স্বীকার করিল। কর্ণেল সেহ্‌গল্‌ অনুসন্ধানের আদেশ দিলেন। তাহাদের তিন জনকে ডিভিসনাল্‌ হেড্‌ কোয়ার্টারে পাঠানো হইল।

১৫ই মার্চ ১৯৪৫:

 কর্ণেল্ শাহ নওয়াজের রণাঙ্গন হইতে যে সংবাদ পাওয়া গেল তাহা ভালোই। গত ১৬ই তারিখে আমাদের সৈন্যদল দুইটি পাহাড় দখল করিয়াছে। খান মুহম্মদ পাহাড়ের উপর ইংরেজদের এই ঘাঁটি আক্রমণে নেতৃত্ব করেন। তখন রাত্রি তিনটা। তীব্র হাতাহাতি যুদ্ধের পর শত্রু পরাজিত হয়। শত্রুপক্ষে প্রায় ২০০ সৈন্য নিহত হইয়াছে। আমাদের দিকে হত হইয়াছে মাত্র ২ জন, আর আহতের সংখ্যা ১০ জন।

 আজ ব্যানার্জির মৃত্যুসংবাদ শুনিলাম। পোপায় একটি খণ্ডযুদ্ধে তাঁহার মৃত্যু হইয়াছে। আজ আর কিছু ভালো লাগিতেছে না।