বিষয়বস্তুতে চলুন

ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ/হৈদরাবাদে

উইকিসংকলন থেকে

হৈদরাবাদে।

 কিন্তু যাহাই হউক, প্রতিবেশী রাজপুতের ন্যায়, এই রাজ্যের লোকেরা এখনও ক্ষুধার জ্বালায় ততটা অভিভূত হয় নাই এবং পরীস্থানতুল্য উহাদের রাজধানীটি আজ উৎসব-আনন্দে আকণ্ঠ-নিমগ্ন;—উহারা নিজামের শুভাগমন প্রতীক্ষা করিতেছে। সমস্ত গৃহের পতাকায়, এবং রাজপথে রেশম-মখ্‌মল-মণ্ডিত যে-সব বিজয়তোরণ স্থাপিত হইয়াছে তাহাদের শিয়োদেশে, এই কথাগুলি বড়-বড় সোনালি অক্ষরে লিখিত রহিয়াছে - “আমাদের নিজামবাহাদুর দীর্ঘজীবী হউন।”

 শুভ্রবর্ণ হৈদরাবাদ। একটি শুষ প্রায় নদী সম্মুখ দিয়া বহিয়া যাইতেছে। হাতীরা দলে-দলে নদীতে নাবিয়া উহার শীতল জলে অবগাহন করিতেছে। এখনো কেন নিজাম স্বরাজ্যে প্রত্যাগমন করিতেছেন না— তাই, উৎসবমত্ত হৈদরাবাদ,—ধ্বজপতাকাভূষিত হৈদরাবাদ, একসপ্তাহ ধরিয়া প্রতিদিন তাহার প্রতীক্ষা করিতেছে।

 যে বিশাল প্রস্তরসেতু দিয়া নগরে প্রবেশ করিতে হয়, সেই সেতুর মুখে স্বর্ণপত্রপচিত লাল ক্রেপ"-বস্ত্রে মণ্ডিত একটি দ্বারপ্রকোষ্ঠ প্রসারিত; —তাহারি ঝালরে লেখা রহিয়াছে;—"স্বাগত নিজামবাহাদুর!"

 এই সেতুর উপর দিয়া কত বর্ণের কত লোক পদব্রজে, কত লোক যানে, কত লোক বাহনে চলিয়াছে;—কতপ্রকার যান, কতপ্রকার বাহন, কতই সমারোহ, তাহার আর ইয়ত্তা নাই! বিষাদময় বিজনতার মধ্য দিয়া যখন আমি এখানে আসিয়া পৌছিলাম, তখন প্রত্যাশা করি নাই, যে-নগর ক্ষেত্রভূমির মধ্যে,—প্রস্তরময় ধূসর মাঠময়দানের মধ্যে বিলীন, সেই নগরটিকে এমন জীবন-উদ্যমে পূর্ণ দেখিব, এমন উজ্জ্বল বর্ণে রঞ্জিত দেখিব, এমন উৎসবানন্দে মত্ত দেখিব।

 শাদা-শাদা, সোজা-সোজা, বড়-বড় রাস্তা—লোকের জনতায় সমাচ্ছন্ন। ফুলের রঙের আভায় যেরূপ নানা প্রকাব সূক্ষ্ম ভেদ লক্ষিত হয়, এই সব লোকদিগের মুখবর্ণেও সেইরূপ সূক্ষ্ম ভেদ বিদ্যমান। নেত্র ঝলসিয়া যায় প্রথমেই উষ্ণীষের অনন্ত বৈচিত্র্য ও বিলাসলীলা দেখিয়া; পাগড়ির গোলাপি রং—"সাম"-মাছের রং—পিচ-ফুলের রং। কোনোটায় কুমুদফুলের, কোনোটায় “অ্যামারাস্ত"-ফুলের, কোনোটায় “নাসি” ফুলের, কোনোটায় “বটবৃকপ"-ফুলের রং। পাগড়িগুলা প্রকাণ্ড-বড় -ছোট-ছোট একপ্রকার চুচাল-মুখ টুপির চারিধারে জড়াইয়া বাধা; এবং পাগড়ির আঁচলটা, পিছনদিকে, পরিচ্ছদের উপর ঝুলিয়া 'পড়িয়াছে।

 কিঞ্চিৎ-কিঞ্চিৎ ব্যবধানে স্থাপিত রাজপথের বিজয়তেরণগুলা গৃহসমূহের মাথা ছাড়াইয়া উঠিয়াছে। তোরণের উপরে সোনালি-"অর্ধচন্দ্র"সমন্বিত মজিদি ধরণের ধ্বজচূড়া (Minaret)। কোথাও বা, এই তোরণের সহিত-রেশমমণ্ডিত ও বংশনির্ম্মিত লঘুধরণের দ্বারপ্রকোষ্ঠ সংযোজিত; নিজামের স্বাগত-অভ্যর্থনার জন্য এই সমস্ত স্থাপিত হইয়াছে। নগরের মধ্যস্থলে – রাজপথসমূহের কেন্দ্রদেশে,—চৌমাথা রাস্তার উপর, একটা প্রকাণ্ড “চারমুখো” তোরণ,—যাহার ধ্বজচূড়া সহরের সমস্ত ধ্বজচূড়া ছাড়াইয়া, মজিদের শীর্ণকায় ধ্বজচূড়া ছাড়াইয়া, হৈদরাবাদের শুভ্র ধূলারাশি ছাড়াইয়া, সুনির্মল ধ্রুব আকাশে একেবারে সিধা উঠিয়াছে।

 সাদাসিধা ছুচাল-মুখ আরবী-খিলাগুলা ভারতে আসিয়া একটু জটিলভাব ধারণ করিয়াছে,এখন উহাতে কোথাও বা ফুলমালার কাজ -কোথাও বা খাঁজকাটা কাজ দৃষ্ট হয়। ভারতীয় শিল্পীরা মূল আদর্শের নকে শ্রীসম্পদে আরো যেন সমৃদ্ধিশালী করিয়া তুলিয়াছে। প্রত্যেক গৃহের প্রথম-তলে কত যে বিচিত্রধরণের ছোট-ছোট খিলান সারি-সারি চলিয়াছে, তাহার আর অন্ত নাই। খিলানগুলা খুব চুচাল অথবা খুব “থ্যাবড়া"-ধরণের; কোনোটা গোলাপ-পাপড়ির আকারে, কোনোটা বা ত্রিপত্র কিংবা বহুপত্র তৃণের আকারে গঠিত। বরাবর রাস্তার ধারেধারে, খোলা বারণ্ডার নীচে, দোকানদারেরা গদি ও গালিচার উপর উপবিষ্ট। দোকানের পশ্চাদ্ভাগে, প্রাচীরের গায়ে বাহিরখিলানের অনুকরণে খিলানের একটা নক্সা কাটা-সবুজ, নীল কিংবা সোনালি রঙে রঞ্জিত; এবং উহাতে প্রায়ই ময়ূরাদির ন্যায় কোন বৃহৎ পক্ষীর বিস্তারিত পুচ্ছের অনুকৃতি দৃষ্ট হয়। ভিন্ন ভিন্ন পণ্যদ্রব্যের ভিন্ন ভিন্ন বিভাগ। কোথও রত্নাদির অলঙ্কার, কোথাও মুক্তার কণ্ঠহার, কোথাও বা বলয়াদি বিক্রীত হইতেছে। সকল দোকানেই,—বহুমূল্য রত্নাদির পার্শ্বে কাচের জিনিষ, এবং খাঁটি সোনার পার্শ্বে ঝুটা চুমকির জিনিষ ঝিকৃমি করিতেছে। সুগন্ধিদ্রব্যের দোকানে-পুরাতন চীনের বুয়েমের মধ্যে বিবিধ ফুলের আতর সংরক্ষিত। একটা দোকানে চুমকি বসানো, জরির কাজকরা ঝকমকে তুর্কিচটিজুতা রহিয়াছে। গণ্ডোলা নৌকার মুখের মত উহাদের অগ্রভাগ উপরদিকে বাকানো। মধ্যে মধ্যে ফুলের দোকান; ছিন্নবৃন্ত গোলাপফুল ছোট-ছোট পাহাড়ের মত স্তুপাকারে সজ্জিত; বালকেরা জুইফুলের রাশীকৃত স্তুপ হইতে ফুল উঠাইয়া-লইয়া মুক্তা গাঁথিবার মত মালা গাথিতেছে। কোথাও বা অস্ত্রাদি বিক্রীত হইতেছে;— বর্শা, দুই হাতে ধরিবার বড়-বড় তলোয়ার, একটা বিশেষ-আকারের বাঘ-মারা ছোৱা। যখন ৰাণ মুখব্যাদান করিয়া মানুষকে আক্রমণ করে, তখন এই ছোরা তাহার গলার বসাইয়া দেওয়া হয়। কোথাও বা বুটাজরির বরের পোষাক,চুমকি-বসনে বর-কনের টোপর বিক্রীত হইতেছে। আর এক স্থানে, (গৃহদির সম্মুখে, খানিকটা “পদ-পপ জুড়িয়া) কতকগুলি লোক মিহি কাপড়ের উপর নক্সা ছাপিতেছে। এই কাপড়গুলা বাষ্পবৎ স্বচ্ছ; 5াল, সবুজ কিংবা হলদে জমির উপর,—রূপালি কিংবা * সোনালি রঙের ছোট-ছোট নক্সা; এই নক্সাগুলি আদৌ স্থায়ী নহে; একফোঁটা বৃষ্টির জলে সমস্তই ধুইয়া যায়। কিন্তু উহার বর্ণবিন্যাস অতি চমৎকার; এই সকল কাপড় অতি “খেলো” হইলেও, এখন এই মুক্তবায়ুসেবী শিল্পীদিগের হস্ত হইতে বাহির হইয়া আইসে, তখন যেন উহা কোন পরীর মোহন অবগুণ্ঠন বলিয়া মনে হয়। সোনা, সোনা, এখানে সর্ব্বত্রই সোনা; অথবা তাহার অভাবে ঝুটা-জরি, সোনালি পাত—এমন কোন কিছু —যাহা দাপ্ত ভানুর উজ্জ্বল কিরণে ঝিকমিক করে, কিংবা কুতূহলী দর্শকের নেত্ররঞ্জন করে।

 এখানকার ধূলা শুভ্র, গৃহগুলি শুভ্র এবং লোকের পরিচ্ছদ রুদ্র। তুষারবৎ শুভ্রতা—রাজপথে, জনতার মধ্যে, দোকান-হাটে; এবং লোকদিগের অম্লান-শুভ্র পরিচ্ছদের উপর — বৃহদাকার মল-পাগড়ির সমস্ত “সারিগম” মন্দ্র গ্রাম হইতে তার গ্রাম পর্য্যন্ত চলিয়াছে।

 রমণীরা অদৃশ্য; (কেন না, ইহা মুসলমানরাজ্য) একটা শাদা ঘেরাটোপে উহাদের আপাদমস্তক আবৃত; বিড়ালগর্ত্তের ন্যায় প্রায়ই উহাতে একএকটা ছিদ্র কাটা;—তাহার মধ্য হইতে, কোলের শিশুর মত ছোটছোট সুন্দর মাথা বাহির হইয়া আছে দেখিতে পাওয়া যায়।

 এই দীর্ঘপ্রবাসী নৃপতির মহিমা কীর্ত্তন করিবার জন্য যে সমস্ত রেশম, মাল, মখমলের সাজসজ্জা স্থানে-স্থানে সজ্জিত রহিয়াছে, তাহারা সকলেই যেন নীরব ভাষায় বলিতেছে:—"নিজামের জয় হউক্!” সমস্ত হৈবাবাদ আজ উল্লাসভরে নিজামের প্রতীক্ষা করিতেছে। এক সপ্তাহ হইতে সমস্তই প্রস্তুত হইয়া আছে;—এমন কি, সজ্জিত পুষ্পগুলি সূর্যোত্তাপে শুকাইয়া যাইতেছে। এখন নিজাম আশিয়িক-আড়ম্বর-সহকারে কলিকাতার রাজপথে ভ্রমণ করিতেছেন;—১২ খানা সোনার গাড়ি তাহার পিছনে-পিছনে চলিয়াছে। তিনি স্বরাজ্যে আর ফিরিয়া আসেন না, কোন সংবাদ দেন না, যাহা খেয়াল হইতেছে তাহাই করিতেছেন। কিন্তু ভারতবাসীরা ইহাতে বিস্মিত নহে;—কেন না, তাহারা সকলেই এইরূপ: করিয়া থাকে। তাই, নিরাশ না হইয়া তাহারা ক্রমাগত তাহার প্রতীক্ষা করিতেছে। তা ছাড়া, এই সকল লঘুবস্ত্রের সাজসজ্জা যে বৃষ্টিতে ভিজিয়া যাইবে, তাহারও কোন আশঙ্কা নাই; কেন না, আকাশ এখন একেবারেই নিমেঘ।

 প্রতিদিন, যেমন বেলা অধিক হইতে থাকে—সেই পরিমাণে, সমস্ত নগরীর ধূলিরাশি, জনকোলাহল, সঙ্গীতাদিরও বৃদ্ধি হইতে থাকে। অবশেষে রাত্রিসমাগমে সমস্তই উপশান্ত হইয়া যায়॥

 ঘোড়ার গাড়ি, বলদের গাড়ি ক্রমাগত যাতায়াত করিতেছে। রহস্যময়ী পর্দ্দা-মহিলাদের জন্য, ডিঙির আকারে বাঁখারির গাড়ি পর্দ্দায় সমস্ত ঢাকা। পর্দ্দার স্থানে-স্থানে ছিদ্র। সেই ছিদ্রের মধ্য হইতে রূপসীগণ। সুচিত্রিত “ডাগর-আঁখির” তীবাণ জনতার উপর বর্ষণ করিতেছেন। কোথাও কোন সুপুরুষ অশ্বারোহী ছুচালটুপির চারিধারে-জড়ানো আলদিন-ধাচার পাগড়ি পরিয়া, জিনের পাশে বল্লম আটকাইয়া—খুব ছুটিয়া চলিয়াছে। বণিদলের উটগুলা দীর্ঘরেখাকারে সারি-সারি চলিয়াছে। ধূলাধূসরিত, কর্দমলিপ্ত মজুরহাতীরা কর্ম্মান্তে ঘরে ফিরিয়া আসিতেছে। বিলাসী হাতীরা সানাই-বাদ্য-সহকারে বরযাত্রীর সঙ্গে চলিয়াছে;—পৃষ্ঠের উপর, বাসাচ্ছাদিত হাওদার মধ্যে—বর প্রচ্ছন্ন।

 পাল্কীবাহকদের, মন্ত্রপাঠের ন্যায়, একঘেয়ে গুঞ্জনধ্বনি শুনা যাইতেছে; জরির কাজ-করা রাশি-রাশি তাকিয়া-বালিশের উপর, চমধার কোন বৃদ্ধকে, অথবা কোন গম্ভীরমুক্তি মোল্লাকে চড়াইয়া, উহারা চটুলপদক্ষেপে চলিয়াছে। ফকিরের কড়ি-সমাচ্ছন্ন কথা পরিয়া, পথে-পথে ভ্রমণ করিতেছে;—এই সব আকুলচিত্ত উন্মাদগ্রস্ত লোকেরা সাধু বলিয়া সমাদৃত;—এখন হইতেই উহাদের নেত্র অন্যত্র - পরলোকের দিকে নিয়োজিত। বৃদ্ধ দরবেশদিগের সুদীর্ঘ কেশকলাপ;—সমস্ত ভস্মাচ্ছন্ন। উহারা ঘণ্টা নাড়িতে-নাড়িতে দ্রুতপদে চলিয়াছে। ইয়েমেন্সী আরবের দলে-দলে ভ্রমণ করিতেছে; নিজাম উহাদিগকে সযত্নে নিজরাজ্যে স্থাপন করিয়াছেন; উহারা যাহাতে স্থায়ী হইয়া প্রজাদের মধ্যে মিশিয়া যায়—ইহাই নিজামের মনোগত অভিপ্রায়। ঐ দেখ, দূর অঞ্চলের কোন অশ্বারোহী সর্দার,জংলি মূর্তি, মহাকায় ঘোড়াকে বিচিত্র-ভঙ্গীতে দৌড় করাইয়া ছুটিয়া চলিয়াছে। তাহার পশ্চাতে কতকগুলা বল্লমধারী ঘোড়সওয়ার।

 ধূপের সৌরভ,— সাজসজ্জার দোকানে পব্বতাকারে সজ্জিত গোলাপফুলের সৌরভ,—ঝুরিভরা শাদা জুয়ের সৌরভ, তুষারপাতের ন্যায় রাস্তার ধূলির উপর আসিয়া পড়িতেছে।•••কে তবে বলিবে, পশ্চিমাঞ্চল হইতে দুর্ভিক্ষ আসিয়াছে—স্বকীয় বিকট দশন বাহির করিয়া দুর্ভিক্ষ ইহারই মধ্যে সীমান্তদেশ পার হইয়াছে। না-জানি তবে কোন্ জলাশয়ের জলসেকে,—কোন্ বিশেষ-রক্ষিত উদ্যানে এই সমস্ত ফুল ফুটানো রহিয়াছে।

 অবশেষে, সূর্যাস্তসময়ে, “সহস্র-এক রজনীর” ব্যক্তিগণ গৃহ হইতে বাহির হইতে লাগিল—সেই সব সৌখীন লোক, যাহাদের নেত্র নীলাঞ্জনে চিত্রিত, যাহাদের শ্মশ্রুজাল সিন্দুর-রঙ্গে রঞ্জিত, যাহারা কিংখাপের পোক কিংবা জরি-বসানো মখমলের পোষাক পরিয়া বাহির হইয়াছে, কণ্ঠে মণিমুক্তার কণ্ঠহার ধারণ করিয়াছে, এবং যাহাদের বামহস্তের মুষ্টির উপর একএকটা পোপাখী রহিয়াছে।

 “স্বাগত নিজামবাহাদুর?”—এই কথাগুলি আবার একটা দ্বার প্রকোষ্ঠের চূড়াদেশে লিখিত রেখিলাম; সেই চূড়াদেশে নারাঙ্গি-রঙের একটা ক্রেপ, কাপড় টানা-—তাহাতে নেবু-হলদে ও গন্ধকি-হলদে রঙের ঝালর ঝুলিতেছে, ঝালরের উপর সবুজ-রঙেব চুমকি বসানো। এই দ্বারপ্রকোষ্ঠের পরেই—স্বর্ণচূড়া ও স্বর্ণ-"অর্ধচন্দ্র"-বিশিষ্ট, তুষার-শুভ্র একটা মজিদ। এই সান্ধ্য-নমাজের সময়ে, ভক্ত মুসলমানের এই মজিদে আসিয়া সমবেত হইয়াছে। উহাদের শুভ্র পরিচ্ছদ,—মাথায় মলমলের কাপড় জড়ানো পাগড়ি; দূর হইতে মনে হয়-যেন বিচিত্ররঙের এক প্রকার খুব বড়-বড় ফুল ছড়ান রহিয়াছে।••'

 কিন্তু এই সময়ে একটা জনরব উঠিল,—নিজামের আসিতে এখনও বিলম্ব আছে; রামাদানের মাস নিশ্চয়ই পার হইয়া যাইবে, বোধ হয় আগামী মাসে আসিবেন, কিংবা আরো বিলম্ব হইতে পারে। ককে ‘আসিবেন, আল্লাই জানেন।