বিষয়বস্তুতে চলুন

উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/বিবিধ প্রবন্ধ/পূজার ছুটির আমোদ

উইকিসংকলন থেকে

পূজার ছুটির আমোদ

 বিদেশী পাচক অনেকেই পূজার ছুটিতে বাড়ি চলিলেন। এই ছুটিতে অনেকেই অনেক প্রকারের আমোদ করবেন। নূতন রকমের আমোদ দেখিবার জন্য সকলেই আগ্রহ প্রকাশ করে। একখানি ইংরাজি বই পড়িয়া যেসব নূতন আমোদের কথা এবারে শিখিয়াছি তাহার কিছু কিছু সংক্ষেপে লিখিতেছি, একবার নিজেরা পরীক্ষা করিয়া দেখিবেন।

 ঘরের মাঝামাঝি একটা পর্দা টাঙাইয়া তাহার একপাশে আলো রাখিয়া তাহাতে আপনারা থাকিবেন। অপর পার্শ্ব অন্ধকার করিয়া তাহাতে কতকগুলি দর্শক ডাকিয়া বসাইবেন। এখন আপনারা আলো এবং পর্দার মাঝখানে দাঁড়াইয়া যেরূপ অঙ্গভঙ্গি করিবেন, পর্দায় তাহার যে ছায়া পড়িবে, তাহাতে তার চেয়ে ঐ সকল অঙ্গভঙ্গি আরো সুন্দর দেখাইবে।

 খুব সরু সুতার দ্বারা একটা পুতুল টাঙাইয়া তাহার পেছনে যতগুলি আলো ধরা যায়,

পর্দায় ঐ পুতুলের ততগুলি ছায়া আসিয়া পড়িবে। এখন এক একটি আলোকে ইচ্ছামতো নাচাইতে থাকুন, পর্দার ছবিও ঐরূপ নাচিবে। দুই-তিনজন লোক হইলে ইহাতে বেশ আমোদ পাইতে পারেন। বলা বাহুল্য, প্রত্যেকে যদি দুহাতে দুটা আলো ধরিতে পারেন তাহা হইলে উত্তম হয়।

 আলোটা একটা টেবিলের উপরে রাখিয়া তাহারা সামনে হাত ধরিলে পর্দায় ঐ হাতের ছায়া পড়িবে। এখন বুদ্ধি খাটাইতে পারিলে হাতটিকে কি হাত দুটিকে এরূপভাবে রাখা যাইতে পারে যে, পর্দায় যে ছায়াটা পড়িবে, তাহাকে একটা না একটা জানোয়ারের মতন দেখাইবে। হাত কিরূপভাবে রাখিলে কোন জানোয়ার হইবে, তাহা মুখে বলা তত সহজ নহে। পাঠকগণ অনুগ্রহপূর্বক যদি একবার ছবিগুলির দিকে তাকান, তাহা হইলে আমার লেখার অপেক্ষা অনেক বেশি পরিষ্কার বুঝিতে পারবেন। জানোয়ারগুলি অবিকল হইল না। কিন্তু যাহা হইয়াছে তাহা দেখিয়াই দর্শকেরা বেশ সন্তুষ্ট হইবেন।