বিষয়বস্তুতে চলুন

কঙ্কাবতী/দ্বিতীয় ভাগ/পঞ্চম পরিচ্ছেদ

উইকিসংকলন থেকে


পঞ্চম পরিচ্ছেদ

শ্মশান

দিক্‌বিদিক্‌ জ্ঞানশূন্য হইয়া, পাগলিনী এখন শ্মশানের দিকে দৌড়িলেন। কিছুদূর যাইয়া দেখিতে পাইলেন, পথে খেতু মাতাকে রাখিয়াছেন, মা'র মস্তকটি আপনার কোলে লইয়াছেন; মা'র কাছে বসিয়া মা'র মুখ দেখিতেছেন আর কাঁদিতেছেন। অবিরল ধারায় অশ্রুবারি তাঁহার নয়নদ্বয় হইতে বিগলিত হইতেছে।

 কঙ্কাবতী নিঃশব্দে তাঁহার নিকটে গিয়া দাঁড়াইলেন। অন্ধকার রাত্রি, সেই জন্য খেতু তাঁহাকে দেখিতে পাইলেন না।

 মা'র মুখপানে চাহিয়া খেতু বলিলেন,— “মা! তুমিও চলিলে? যখন কঙ্কাবতী গেল, তখন মনে করিয়াছিলাম, এ ছাঁর জীবন আর রাখিব না। কেবল, মা, তোমার মুখপানে চাহিয়া বঁচিয়াছিলাম। এখন মা, তুমিও গেলে? তবে আর আমার এ প্রাণে কাজ কি? কিসের জন্য, কার জন্য আর বঁচিয়া থাকিব? এ সংসারে থাকা কিছু নয়। এখানে বড় পাপ, বড় দুঃখ। বেশ করিয়াছ, কঙ্কাবতী, এখান হইতে গিয়াছে! বেশ করিলে, মা! যে, এ পাপ সংসার হইতে তুমিও চলিলে! চল, মা! যেখানে কঙ্কাবতী, যেখানে তুমি, সেইখানে আমিও শীঘ্র যাইব। এই সসাগরা পৃথিবী আজ আমার পক্ষে শ্মশান-ভূমি হইল। এ সংসারে আর আমার কেহ নাই। চল, মা, শীঘ্রই তোমাদিগের নিকট গিয়া প্রাণের এ দারুণ জ্বালা জুড়াইব। মা! কঙ্কাবতীকে বলিও, শীঘ্রই গিয়া আমি তাহার সহিত মিলিব।”

 কঙ্কাবতী আসিয়া অধোমুখে খেতুর সম্মুখে দাঁড়াইলেন। খেতু চমকিত হইলেন, অন্ধকারে চিনিতে পারিলেন না।

 কঙ্কাবতী মা'র পায়ের নিকট গিয়া বসিলেন। মা'র পা দুখানি আপনার কোলের উপর তুলিয়া লইলেন। সেই পায়ের উপর আপনার মাথা রাখিয়া নীরবে কাঁদিতে লাগিলেন। ঘোরতর বিস্মিত হইয়া, অনেকক্ষণ ধরিয়া, খেতু তাঁহার মুখপানে চাহিয়া রহিলেন। অবশেষে খেতু বলিলেন, —“কঙ্কাবতী! জ্ঞান হইয়া পর্যন্ত এ পৃথিবীতে কখনও কাহারও অনিষ্টচিন্তা করি নাই, সর্ব্বদা সকলের ইষ্টচিন্তাই করিয়াছি। জানিয়া-শুনিয়া কখনও মিথ্যাকথা বলি নাই, প্রবঞ্চনা কখনও করি নাই, কোনওরূপ দুষ্কর্ম্ম কখনও করি নাই। তবে কি মহাপাপের জন্য আজ আমার এ ভীষণ দণ্ড, আজ এ ঘোর নরক! বিনা দোষে কত দুঃখ পাইয়াছি, তাহা সহিয়াছি। গ্রামের লোকে বিধিমত উৎপীড়ন করিলে, তাহাও সহিলাম; প্রাণের পুতলি তুমি কঙ্কাবতী জলে ডুবিয়া মরিলে, তাহাও সহিলাম; প্রাণের অধিক মা আমার আজ মরিলেন, তাহাও সহিলাম; কিন্তু এই সঙ্কটসময়ে তুমি যে আমার শক্রতা সাধিবে, স্বপ্নেও তাহা কখনও ভাবি নাই! মাতার মৃতদেহ একেলা আমি আর বহিতে পারিতেছি না। মাতার পীড়ার জন্য আজ তিন দিন আহার নাই, নিদ্রা নাই। আজ তিন দিন একবিন্দু জল পর্যন্ত আমি খাই নাই। শরীরে আমার শক্তি নাই, শরীর আমার অনুসন্ন হইয়া পড়িয়াছে। আর একটি পা-ও আমি লইয়া যাইতে পারিতেছি না। কি করি, ভাবিয়া আকুল হইয়াছি। এমন সময়ে কি না, তুমি কঙ্কাবতী, ভূত হইয়া আমাকে ভয় দেখাইতে আসিলে! দুঃখের এইবার আমার চারি পো হইল। এ দুঃখ আমি আর সহিতে পারি না।”

 কাঁদ কাঁদ স্বরে অধোমুখে, কঙ্কাবতী উত্তর করিলেন,— “আমি ভূত হই নাই, আমি মরি নাই, আমি জীবিত আছি।”

 আশ্চর্য্য হইয়া খেতু জিজ্ঞাসা করিলেন,— “তুমি জীবিত আছ? জলে ডুবিয়া গেলে, তোমায় আমরা কত অনুসন্ধান করিলাম। তোমাকে খুঁজিয়া পাইলাম না। মনে করিলাম, আমিও মরি। মরিবার নিমিত্ত জলে ঝাঁপ দিলাম। সাঁতার জানিয়াও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়া জলের ভিতর রহিলাম, কিছুতেই উঠিলাম না। তাহার পর জ্ঞানশূন্য হইয়া পড়িলাম। অজ্ঞান অবস্থায় জেলেরা আমাকে তুলিল, তাহারা আমাকে বাঁচাইল। জ্ঞান হইয়া দেখিলাম, মা আমার কাঁদিতেছেন। মা'র মুখপানে চাহিয়া প্রাণ ধরিয়া রহিলাম। কঙ্কাবতী, তুমি কি করিয়া বাঁচিলে?”

 কঙ্কাবতী উত্তর করিলেন,— “সে অনেক কথা। সকল কথা পরে বলিব। আমি গোয়ালিনী মাসীর বাটীতে ছিলাম। এই ঘোর বিপদের কথা সেইখানে শুনিলাম। আমি থাকিতে পারিলাম না, আমি ছুটিয়া আসিলাম। এক্ষণে চল, মাতাকে ঘাটে লইয়া যাই। তুমি একদিক ধর, আমি একদিক ধরি।”

 এই প্রকারে কঙ্কাবতী ও খেতু মাকে ঘাটে লইয়া যাইলেন। সেখানে গিয়া দুই জনে চিতা সাজাইলেন। মাকে উত্তমরূপে স্নান করাইলেন। নূতন কাপড় পরাইলেন। তাহার পর চিতার উপর তুলিলেন। চিতার উপর তুলিয়া দুই জনে মায়ের পা ধরিয়া অনেকক্ষণ কাঁদিলেন।

 খেতু বলিলেন, —“মা! তুমি স্বৰ্গে চলিলে। দীনহীন তোমার এই পুত্রকে আশীর্ব্বাদ কর, ধর্ম্মপথ হইতে যেন কখনও বিচলিত না হই। সত্য যেন আমার ধ্যান, সত্য যেন আমার জ্ঞান, সত্য যেন আমার ক্রিয়া হয়। ধনলালসায়, কি সুখলালসায়, কি যশোলালসায় যেন সত্যপথ, ধর্ম্মপথ কখনও পরিত্যাগ না করি। অজ্ঞান কপটাচারী জনসমাজের ভ্রুকুটি-ভঙ্গিমায় ভীরু নরাধমদিগের মত কম্পিত হইয়া, যেন কর্ত্তব্যে কখনও পরাঙ্মুখ না হই। হে মা! প্রাণ যায় যাউক! পুরুষ হইয়া যেন কখনও কাপুরুষ না হই।”

 কঙ্কাবতী বলিলেন,— “মা! তুমি স্বর্গে চলিলে, তোমার এই অনাথিনী কঙ্কাবতীর প্রতি একবার কৃপাদৃষ্টি কর। জাগরণে, শয়নে, স্বপনে, মা যেন ধর্ম্মে আমার মতি হয়, যেন ধর্ম্ম আমার গতি হয়। অধিক আর, মা, তোমাকে কি বলিব! কঙ্কাবতীর মনের কথা তুমি সকল জান। কঙ্কাবতীর প্রাণরক্ষা হউক না হউক, কঙ্কাবতীর ধর্ম্মরক্ষা হইবে। যদি এ-দিকের সূর্য্য ও-দিকে উদয় হন, যদি মহাপ্রলয় উপস্থিত হয়, তবুও কঙ্কাবতী যদি সতী হয়, কঙ্কাবতীকে কেহ ধর্ম্মচ্যুত করিতে পরিবে না। মনে মনে চিরকাল এই প্রতিজ্ঞা রহিয়াছে, আজ আবার, মা, তোমার পা ছুইয়া মুখ ফুটিয়া সেই প্রতিজ্ঞা করিলাম। হে মা! তোমার কঙ্কাবতী এখন পাগলিনী, তোমার কঙ্কাবতীর অপরাধ ক্ষমা কর।”

 খেতু বলিলেন,— “কঙ্কাবতী! কি করিয়া চিতায় আগুন দিই? জনমের মত কি করিয়া মাকে বিদায় করি! আর মাকে দেখিতে পাইব না। এস কঙ্কাবতী! ভাল করিয়া আর একবার মা'র মুখখানি দেখিয়া লই!”

 মুখের নিকট দাঁড়াইয়া, অনেকক্ষণ ধরিয়া খেতু মা'র চুলগুলি নাড়িতে লাগিলেন। কঙ্কাবতী পাশে দাঁড়াইয়া কেবল কাঁদিতে লাগিলেন।

 খেতু বলিলেন,— “দেখ কঙ্কাবতী! কি স্থির শান্তিময়ী মুখশ্রী! মা যেন পরমসুখে নিদ্রা যাইতেছেন। তোমার কি মনে পড়ে, কঙ্কাবতী! যখন তুমি বিড়াল লইয়া খেলা করিতে? প্রথম ভাগ বর্ণপরিচয় যখন তুমি পড়িতে পারিতে না? আমি তোমাকে কত বকিতাম, আর মা আমার উপর রাগ করিতেন। মা আমাকে যেরূপ ভালবাসিতেন, সেইরূপ তোমাকেও ভালবাসিতেন। আহা! কঙ্কাবতী! কি মা আমরা হারাইলাম!”

 এই প্রকারে নানারূপ খেদ করিয়া অবশেষে চিতা প্রদক্ষিণ করিয়া, খেতু অগ্নিকার্য্য করিলেন। চিতা ধূ-ধূ করিয়া জ্বলিতে লাগিল।

 কঙ্কাবতী ও খেতু নিকটে বসিয়া মাঝে মাঝে কাঁদেন, মাঝে মাঝে খেদ করেন, আর মাঝে মাঝে অন্যান্য কথাবার্ত্তা কন। কি করিয়া জল হইতে রক্ষা পাইয়াছেন, কঙ্কাবতী সেই সমুদয় কথা খেতুকে বলিলেন। খেতু মনে করিলেন, নানা দুঃখে কঙ্কাবতীর চিত্ত বিকৃত হইয়াছে। দুঃখের উপর দুঃখ, এ আবার এক নূতন দুঃখ তাঁহার মনে উপস্থিত হইল। মনের কথা খেতু কিন্তু কিছু প্রকাশ করিলেন না। মা'র সৎকার হইয়া যাইলে, দুই জনে নদীতে স্নান করিলেন।

 তাহার পর খেতু বলিলেন,— “কঙ্কাবতী! চল, তোমাকে বাড়ীতে রাখিয়া আসি।”

 কঙ্কাবতী উত্তর করিলেন,— “পুনরায় আমি কি করিয়া বাড়ী যাই? বাবা আমাকে তিরস্কার করবেন, দাদা আমাকে গালি দিবেন! আমি জলের ভিতর গিয়া মাছেদের কাছে থাকি, না হয় গোয়ালিনী মাসীর ঘরে যাই।”

 খেতু বলিলেন,— “কঙ্কাবতী! সে কাজ করিতে নাই। তোমাকে বাড়ী যাইতে হইবে। যতই কেন দুঃখ পাও না, ঘরে থাকিয়া সহ্য করিতে হইবে। মনোযোগ করিয়া আমার কথা শুন! আর এখন বালিকার মত কথা কহিলে চলিবে না। ভীষণ মহাসাগরবক্ষে উন্মত্ত তরঙ্গ-তাড়িত জীর্ণদেহ সামান্য দুইখানি তরণীর ন্যায়, আমরা দুই জনে এই সংসার কর্ত্তৃক তাড়িত হইতেছি। তাই কঙ্কাবতী! বুদ্ধি-বিবেচনার সহিত আমাদের কথা বলিতে হইবে, বুদ্ধি-বিবেচনার সহিত আমাদের কাজ করিতে হইবে। মাতার পদযুগল ধরিয়া আজ রাত্রিতে যেরূপ ধীর জ্ঞানগম্ভীর বাক্য তোমার মুখ হইতে নিঃসৃত হইয়াছিল, এখন হইতে সেইরূপ কথা আমি তোমার মুখে শুনিতে চাই। ভাবী ঘটনার উপর মনুষ্যদিগের সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব না থাকুক, অনেক পরিমাণে আছে। তা না হইলে, ভাবী ফলের প্রতীক্ষায় কৃষক কেন ক্ষেত্রে কর্ম্ম-বীজ বপন করিবে? উদ্যম-উৎসাহের সহিত মনুষ্য এই সংসারক্ষেত্রে কর্ম্ম-বীজ কেন রোপণ করিবে? মনুষ্যের অজ্ঞানতাবশতঃ ভাবী ঘটনার উপর কর্ত্তৃত্বের ইতরবিশেষ হইয়া থাকে। এই ভাবী ফলপ্রতীক্ষাই মনুষ্যের আশা-ভরসা। সেই আশা-ভরসাকে সহায় করিয়া আজ আমি তোমার নিকট হইতে বিদায় হইতেছি। তুমি বাড়ী চল, তোমাকে বাড়ীতে রাখিয়া আসি। বাটীর বাহিরে তুমি পা রাখিয়াছ বলিয়া, জনার্দ্দন চৌধুরী আর তোমাকে বিবাহ করিবেন না। সত্বর অন্য পাত্র সংঘটন হওয়াও সম্ভব নয়। তোমার পিতা ভ্রাতা যাহা কিছু তোমার লাঞ্ছনা করেন, একবৎসরকাল পর্যন্ত সহ্য করিয়া থাক। শুনিয়াছি, পশ্চিম অঞ্চলে অধিক বেতনে কর্ম্ম পাওয়া যায়। আমি এক্ষণে পশ্চিমে চলিলাম। কাশীতে মাতার শ্রাদ্ধাদি-ক্রিয়া সমাধা করিয়া, কর্ম্মের অনুসন্ধান করিব। একবৎসরের মধ্যে যাহা কিছু অর্থসঞ্চয় করিতে পারি, তাহা আনিয়া তোমার পিতাকে দিব। আমি নিশ্চয় বলিতেছি, তখন তোমার পিতা আহ্লাদের সহিত আমার প্রার্থনা পরিপূর্ণ করিবেন। কেবল একবৎসর, কঙ্কাবতী! দেখিতে দেখিতে যাইবে। দুঃখে হউক, সুখে হউক, ঘরে থাকিয়া, কোনও রূপে এই একবৎসরকাল অতিবাহিত কর।”

 তখন কঙ্কাবতী বলিলেন,— “তুমি আমাকে যেরূপ আজ্ঞা করিবে, আমি সেইরূপ করিব।”

 দুইজনে ধীরে ধীরে গ্রামাভিমুখে চলিলেন। রাত্রি সম্পূর্ণ প্রভাত হয় নাই, এমন সময় দুই জনে তনু রায়ের দ্বারে গিয়া উপস্থিত হইলেন।

 খেতু বলিলেন,— “কঙ্কাবতী! তবে এখন আমি যাই! সাবধানে থাকিবে।”

 'যাই যাই' করিয়াও খেতু যাইতে পারেন না। যাইতে খেতুর পা সরে না। দুইজনের চক্ষুর জলে তনু রায়ের দ্বার ভিজিয়া গেল।  একবার সাহসে ভর করিয়া খেতু কিছুদূর যাইলেন, কিন্তু পুনরায় ফিরিয়া আসিলেন, আর বলিলেন,— “কঙ্কাবতী! একটি কথা তোমাকে ভাল করিয়া বলিতে ভুলিয়া গিয়াছি। কথাটি এই যে, অতি সাবধানে থাকিও।”

 আবার কিছুক্ষণ ধরিয়া দুইজনে কথা কহিতে লাগিলেন। ক্রমে প্রভাত হইল, চারিদিকে লোকের সাড়াশব্দ হইতে লাগিল।

 তখন খেতু বলিলেন,— “কঙ্কাবতী! এইবার আমি নিশ্চয় যাই। অতি সাবধানে থাকিবে। কাঁদিও কাটিও না। যদি বঁচিয়া থাকি, তো একবৎসর পরে নিশ্চয় আমি আসিব। তখন আমাদের সকল দুঃখ ঘুচিবে! তোমার মাকে সকল কথা বলিও, অন্য কাহাকেও কিছু বলিবার আবশ্যক নাই।”

 খেতু এইবার চলিয়া গেলেন। যতদূর দেখা যাইল, ততদূর কঙ্কাবতী সেই দিকপানে একদৃষ্টি চাহিয়া রহিলেন। তাহার পর, চক্ষুর জলে তিনি পৃথিবী অন্ধকারময় দেখিতে লাগিলেন। জ্ঞানশূন্য হইয়া ভূতলে পতিত হইবার ভয়ে, দ্বারের পাশে প্রাচীরে তিনি ঠেশ দিয়া দাঁড়াইলেন। খেতু ফিরিয়া দেখিলেন যে, চিত্রপুত্তলিকার ন্যায় কঙ্কাবতী দাঁড়াইয়া আছেন। তাহার পর আর দেখিতে পাইলেন না।

 খেতু ভাবিলেন,— “হা জগদীশ্বর! মনুষ্য-হৃদয় তুমি কি পাষাণ দিয়াই নির্ম্মাণ করিয়াছ! যে, ঐ প্রভাহীনা মলিনা কাঞ্চন-প্রতিমাকে ওখানে ছাড়িয়া, এখানে আমার হৃদয় এখনও চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় নাই।”