বিষয়বস্তুতে চলুন

কথামালা (১৮৭৭)/নেকড়ে বাঘ ও মেষের পাল

উইকিসংকলন থেকে

নেকড়ে বাঘ ও মেষের পাল

কোনও স্থানে কতকগুলি মেষ চরিত এবং কতিপয় বলবান কুকুর তাহাদের রক্ষণাবেক্ষণ করিত। কুকুরের ভয়ে, নেকড়ে বাঘে মেষদিগকে আক্রমণ করিতে পারিত না। একদা, বাঘেরা পরামর্শ করিল, এই সমস্ত কুকুর থাকিতে, আমরা কিছুই করিতে পারিব না। কোনও কৌশল করিয়া, ইহাদিগকে দূর করতে না পারিলে, আমাদের সুবিধা নাই। অতএব, যাহাতে ইহারা মেষগণের নিকট হইতে যায়, এমন কোনও উপায় করা আবশ্যক।

 এই স্থির করিয়া, তাহারা মেষগণের নিকট বলিয়া পাঠাইল, এস আমরা অতঃপর সন্ধি করি। কেন চির কাল পরস্পর বিবাদ করিয়া মরি। যে সকল কুকুর তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করে, তাহারাই এই সমস্ত বিবাদের মূল। তাহারা অনবরত চীৎকার করে, তাহাতেই আমাদের বিষম কোপ জন্মে। তাহাদিগকে বিদায় করিয়া দাও, তাহা হইলেই, চির কাল আমাদের পরস্পর বন্ধুতা থাকিবেক। নির্বোধ মেষগণ, এই কুমন্ত্রণা শুনিয়া কুকুরদিগকে বিদায় করিয়া দিল। এই রূপে, তাহারা রক্ষকশূন্য হওয়াতে, বাঘেরা, নিরুদ্বেগে তাহাদের প্রাণ সংহার করিয়া, ইচ্ছামত উদরপূর্ত্তি করিল।

 শত্রুর কথায় ভুলিয়া, হিতৈষী বন্ধুকে দূর করিয়া দিলে, নিশ্চিত বিপদ ঘটে।