কথামালা (১৮৭৭)/হরিণ ও দ্রাক্ষালতা
অবয়ব
(পৃ. ৬১-৬২)
হরিণ ও দ্রাক্ষালতা
ব্যাধগণে তাড়াতাড়ি করাতে, এক হরিণ, প্রাণভয়ে পলাইয়া, দ্রাক্ষালতার মধ্যে লুকাইয়া রহিল। ব্যাধেরা, তাহার সন্ধান না পাইয়া, দ্রাক্ষাবনের ধার দিয়া, চলিয়া যাইতে লাগিল। হরিণ মনে ভাবিল, ব্যাধগণ চলিয়া গিয়াছে, আর আমার কোনও ভয় নাই। এইরূপ স্থির করিয়া, সে স্বচ্ছন্দ মনে দ্রাক্ষালতা ভক্ষণ করিতে আরম্ভ করিল। ব্যাধেরা লতা ভক্ষণের শব্দ শুনিতে পাইয়া, বনের দিকে মুখ ফিরাইল, এবং সেই স্থানে হরিণ আছে বুঝিতে পারিয়া তাহাকে লক্ষ্য করিয়া, এক শর ক্ষেপণ করিল। সেই শরের আঘাতে হরিণের মৃত্যু হইল। হরিণ, এই কয়টি কথা বলিয়া, প্রাণ ত্যাগ করিল যে, যাহারা বিপদের সময়, আমায় আশ্রয় দিয়াছিল, আমি তাহাদের যে অপকার করিতে আরম্ভ করিয়াছিলাম, তাহার সমুচিত প্রতিফল পাইলাম।