বিষয়বস্তুতে চলুন

কল্কিপুরাণ (ভুবনচন্দ্র বসাক)/কোক বিকোক বধ

উইকিসংকলন থেকে

কোক বিকোক বধ।

ক্রমে বড় যুদ্ধ বাধে কলির সহিতে।
ধর্ম্ম সত্যযুগ শরে পড়িল মহীতে«

গর্দ্দভ বাহন ছেড়ে হাঁ করে বদন।
রক্ত মাখা কলেবর করে পলায়ন॥
চূর্ণ হলো পেঁচা রথ দম্ভ মোহ পায়।
প্রাসাদের গদাঘাতে লোভ মুণ্ড, যায়॥
অভয়ের হাতে ক্রোধ সুখ হাতে ভয়।
নিদয় মুদের মুষ্টে যায় যমালয়॥
আধি ব্যাধি আদি সব ভেগে যায় ডরে।
শরাসনে কলির নগর দগ্ধ করে॥
মরিল কলির নারী আর প্রজাগণ।
কাঁদিতে কাঁদিতে কলি করে পলায়ন॥
শক ও কাম্বোজে মরু, করিল নিধন।
দেবাপি শবর চোল বর্ব্বর সুজন॥
মারিল বিশাখযূপ পুলিন্দ পুক্কস।
ক্রমেতে বিপক্ষ সেনা হইল হতাশ॥
স্বয়ং কল্কি গদা ধরে আইলেন রণে।
ঘোর যুদ্ধ লাগে কোক বিকোকের সনে॥
বৃকাসুর পুত্ত্র দুটো শকুনির নাতি।
মধু ও কৈটভ সম ভীষণ মূরতি॥
কল্কি-গদাঘাতে তারা পড়ে ধরাতলে।
দেখে লোক আশ্চর্য্য আশ্চর্য্য সবে বলে॥

বিকোকের মাথা কাটে কল্কি ক্রোধভরে।
বিকোকে দেখিলে কোক অম্‌নি উঠে পড়ে ॥
মরিলে না মরে দুটো দেখি দেবগণ।
কল্কিও আশ্চর্য্য বড় কোরে দরশন॥
বিকোকে বাঁচালে কোক দেখে গদাধারী।
কাটেন কোকের মাথা যায় গড়াগড়ি॥
বিকোক দেখিলে কোকে উঠে খাড়া হয়।
কল্কিরে মারিতে আসে মিলিয়া উভয়॥
ভেবে ভেবে রেগে কল্কি না দেখে উপায়।
মরিলে না মরে দুষ্টো বড় হলো দায়॥
তেড়ে গালাগালি দেব কত শত করে।
রেগে রেগে কথা কয় কিছু নাহি ডরে॥
ব্রহ্মা আসি ধীরে ধীরে কল্কিদেবে কয়।
অস্ত্র শস্ত্রে এরা বিনষ্ট হবার নয়॥
একেবারে মুষ্টাঘাতে দুটো নষ্ট হবে।
তখনি মরিবে দুটো মারিবেন যবে॥
ব্রহ্মার বচন শুনি ছাড়ি অস্ত্র বাণ।
ক্রোধ ভরে শিরে করে বজ্রমুষ্টি দান॥
পড়িল আছাড় খেয়ে মাথা ভেঙে যায়।
মরিল দানব দ্বয় দেখে ভয় পায়॥

দেবে করে পুষ্প বৃষ্টি গন্ধর্ব্বেরা গান।
অপ্‌সরেরা নৃত্য করে ঋষিরা ধ‍্যেয়ান॥
কোক ও বিকোক বধে করি হর্ষে পরে।
দুষ্টের সমস্ত সেনা ক্রমে নষ্ট করে॥
মরিল সকল ম্লেছ গেল ধরা-ভার।
সবাই কল্কিরে পূজে দিয়ে অলঙ্কার॥

ইতি কোক বিকোক বধ।