কালান্তর (২০১৮)/শূদ্রধর্ম

উইকিসংকলন থেকে

শূদ্রধর্ম

মানুষ জীবিকার জন্যে নিজের সুযােগমত নানা কাজ করে থাকে। সাধারণত সেই কাজের সঙ্গে ধর্মের যােগ নেই, অর্থাৎ তার কর্তব্যকে প্রয়ােজনের চেয়ে বেশি মূল্য দেওয়া হয় না।

 ভারতবর্ষে একদিন জীবিকাকে ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। তাতে মানুষকে শান্ত করে। আপনার জীবিকার ক্ষেত্রকে তার সমস্ত সংকীর্ণতা- সমেত মানুষ সহজে গ্রহণ করতে পারে।

 জীবিকানির্বাচন সম্বন্ধে ইচ্ছার দিকে যাদের কোনাে বাধা নেই, অধিকাংশ স্থলে ভাগ্যে তাদের বাধা দেয়। যে মানুষ রাজমন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখে, কাজের বেলায় তাকে রাজার ফরাসের কাজ করতে হয়। এমন অবস্থায় কাজের ভিতরে ভিতরে তার বিদ্রোহ থামতে চায় না।

 মুশকিল এই যে রাজসংসারে ফরাসের কাজের প্রয়ােজন আছে, কিন্তু রাজমন্ত্রীর পদেরই সম্মান। এমন-কি, যে স্থলে তার পদই আছে, কর্ম নেই, সেখানেও সে তার খেতাব নিয়ে মানের দাবি করে। ফরাস এ দিকে খেটে খেটে হয়রান হয় আর মনে মনে ভাবে, তার প্রতি দৈবের অবিচার। পেটের দায়ে অগত্যা দীনতা স্বীকার করে, কিন্তু ক্ষোভ মেটে না।

 ইচ্ছার স্বাধীনতার স্বপক্ষে ভাগ্যও যদি যােগ দিত, সব ফরাসই যদি রাজমন্ত্রী হয়ে উঠত, তা হলে মন্ত্রণার কাজ যে ভাললা চলত তা নয়, ফরাসের কাজও একেবারেই বন্ধ হয়ে যেত।

 দেখা যাচ্ছে, ফরাসের কাজ অত্যাবশ্যক, অথচ ফরাসের পক্ষে তা অসন্তোষজনক। এমন অবস্থায় বাধ্য হয়ে কাজ করা অপমানকর।

 ভারতবর্ষ এই সমস্যার মীমাংসা করেছিল বৃত্তিভেদকে পুরুষানুক্রমে পাকা করে দিয়ে। রাজশাসনে যদি পাকা করা হত তা হলে তার মধ্যে দাসত্বের অবমাননা থাকত এবং ভিতরে ভিতরে বিদ্রোহের চেষ্টা কখনােই থামত না। পাকা হল ধর্মের শাসনে। বলা হল, এক-একটা জাতির এক-একটা কাজ তার ধর্মেরই অঙ্গ।

 ধর্ম আমাদের কাছে ত্যাগ দাবি করে। সেই ত্যাগ আমাদের দৈন্য নয়, আমাদের গৌরব। ধর্ম আমাদের দেশে ব্রাহ্মণ শূদ্র সকলকেই কিছু-না-কিছু ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছে। ব্রাহ্মণকেও অনেক ভােগবিলাস ও প্রলােভন পরিত্যাগ করবার উপদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তার সঙ্গে ব্রাহ্মণ প্রচুর সম্মান পেয়েছিল। না পেলে সমাজে সে নিজের কাজ করতেই পারত না। শূদ্রও যথেষ্ট ত্যাগ স্বীকার করেছে, কিন্তু সমাদর পায় নি। তবুও সে কিছু পাক আর না পাক, ধর্মের খাতিরে হীনতা স্বীকার করার মধ্যেও তার একটা আত্মপ্রসাদ আছে।

 বস্তুত জীবিকানির্বাহকে ধর্মের শ্রেণীতে ভুক্ত করা তখনি চলে যখন নিজের প্রয়ােজনের উপরেও সমাজের প্রয়ােজন লক্ষ্য থাকে। ব্রাহ্মণ ভাতে-ভাত খেয়ে, বাহ্য দৈন্য স্বীকার করে নিয়ে, সমাজের আধ্যাত্মিক আদর্শকে সমাজের মধ্যে বিশুদ্ধ যদি রাখে, তবে তার দ্বারা তার জীবিকানির্বাহ হলেও সেটা জীবিকানির্বাহের চেয়ে বড়াে— সেটা ধর্ম। চাষি যদি চাষ না করে তবে একদিনও সমাজ টেকে না। অতএব চাষি আপন জীবিকাকে যদি ধর্ম বলে স্বীকার করে তবে কথাটাকে মিথ্যা বলা যায় না। অথচ এমন মিথ্যা সান্ত্বনা তাকে কেউ দেয় নি যে চায় করার কাজ ব্রাহ্মণের কাজের সঙ্গে সম্মানে সমান। যে-সব কাজে মানুষের উচ্চতর বৃত্তি খাটে মানবসমাজে স্বভাবতই তার সম্মান শারীরিক কাজের চেয়ে বেশি, এ কথা সুস্পষ্ট।

 যে দেশে জীবিকা-অর্জনকে ধর্মকর্মের শামিল করে দেখে না সে দেশেও নিম্নশ্রেণীর কাজ বন্ধ হলে সমাজের সর্বনাশ ঘটে। অতএব সেখানেও অধিকাংশ লােককেই সেই কাজ করতেই হবে। সুযােগের সংকীর্ণতা-বশত সেরকম কাজ করবার লােকের অভাব ঘটে না, তাই সমাজ টিকে আছে। আজকাল মাঝে মাঝে যখন সেখানকার শ্রমজীবীরা সমাজের সেই গরজের কথাটা মাথা নাড়া দিয়ে সমাজের নিষ্কর্মা বা পরাসক্ত বা বুদ্ধিজীবীদের জানান দেয়, তখন সমাজে একটা ভূমিকম্প উপস্থিত হয়। তখন কোথাও বা কড়া রাজশাসন কোথাও বা তাদের আর্জি-মঞ্জুরির দ্বারা সমাজরক্ষার চেষ্টা হয়।

 আমাদের দেশে বৃত্তিভেদকে ধর্মশাসনের অন্তর্গত করে দেওয়াতে এরকম অসন্তোষ ও বিপ্লবচেষ্টার গােড়া নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতে করে জাতিগত কর্মধারাগুলির উৎকর্ষসাধন হয়েছে কি না ভেবে দেখবার বিষয়।

 যে-সকল কাজ বাহ্য অভ্যাসের নয়, যা বুদ্ধিমূলক বিশেষ ক্ষমতার দ্বারাই সাধিত হতে পারে, তা ব্যক্তিগত না হয়ে বংশগত হতেই পারে। যদি তাকে বংশে আবদ্ধ করা হয় তা হলে ক্রমেই তার প্রাণ মরে গিয়ে বাইরের ঠাটটাই বড়াে হয়ে ওঠে। ব্রাহ্মণের যে সাধনা আন্তরিক তার জন্যে ব্যক্তিগত শক্তি ও সাধনার দরকার; যেটা কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিক সেটা সহজ। আনুষ্ঠানিক আচার বংশানুক্রমে চলতে চলতে তার অভ্যাসটা পাকা ও দম্ভটা প্রবল হতে পারে, কিন্তু তার আসল জিনিসটি মরে যাওয়াতে আচারগুলি অর্থহীন বােঝা হয়ে উঠে জীবন-পথের বিঘ্ন ঘটায়। উপনয়নপ্রথা এক সময়ে আর্যদ্বিজদের পক্ষে সত্য পদার্থ ছিল; তার শিক্ষা, দীক্ষা, ব্রহ্মচর্য, গুরুগৃহবাস, সমস্তই তখনকার কালের ভারতবর্ষীয় আর্যদের মধ্যে প্রচলিত শ্রেষ্ঠ আদর্শগুলিকে গ্রহণ করবার পক্ষে উপযােগী ছিল। কিন্তু যে-সকল উচ্চ আদর্শ আধ্যাত্মিক,যার জন্যে নিয়তজাগরূক চিৎশক্তির দরকার, সে তাে মৃত পদার্থের মতাে কঠিন আচারের পৈতৃক সিন্ধুকের মধ্যে বদ্ধ করে রাখবার নয়;সেইজন্যেই স্বভাবতই উপনয়নপ্রথা এখন প্রহসন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার কারণ, উপনয়ন যে আদর্শের বাহন ও চিহ্ন সেই আদর্শই গেছে সরে। ক্ষত্রিয়েরও সেই দশা; কোথায় যে সে তাকে খুঁজে পাওয়া শক্ত। যারা ক্ষত্রিয়বর্ণ বলে পরিচিত, জাতকর্ম বিবাহ প্রভৃতি অনুষ্ঠানের সময়েই তারা ক্ষত্রিয়ের কতকগুলি পুরাতন আচার পালন করে মাত্র।

 এ দিকে শাস্ত্রে বলছেন: স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ। এ কথাটার প্রচলিত অর্থ এই দাঁড়িয়েছে যে, যে বর্ণের শাস্ত্রবিহিত যে ধর্ম তাকে তাই পালন করতে হবে। এ কথা বললেই তার তাৎপর্য এই দাঁড়ায় যে, ধর্ম-অনুশাসনের যে অংশটুকু অন্ধভাবে পালন করা চলে তাই প্রাণপণে পালন করতে হবে তার কোনাে প্রয়ােজন থাক্ আর নাই থাক, তাতে অকারণে মানুষের স্বাধীনতার খর্বতা ঘটে ঘটুক, তার ক্ষতি হয় হােক। অন্ধ আচারের অত্যাচার অত্যন্ত বেশি, তার কাছে ভালােমন্দর আন্তরিক মূল্যবােধ নেই। তাই যে শুচিবায়ুগ্রস্ত মেয়ে কথায় কথায় স্নান করতে ছােটে, সে নিজের চেয়ে অনেক ভালাে লােককে বাহ্য শুচিতার ওজনে ঘৃণাভাজন মনে করতে দ্বিধা বােধ করে না। বস্তুত তার পক্ষে আন্তরিক সাধনার কঠিনতর প্রয়াস অনাবশ্যক। এইজন্যে অহংকার ও অন্যের প্রতি অবজ্ঞায় তার চিত্তের অশুচিতা ঘটে। এই কারণে আধুনিক কালে যারা বুদ্ধিবিচার জলাঞ্জলি দিয়ে সমাজ-কর্তাদের মতে স্বধর্ম পালন করে তাদের ঔদ্ধত্য এতই দুঃসহ অথচ এত নিরর্থক।

 অথচ জাতিগত স্বধর্ম পালন করা খুবই সহজ, যেখানে সেই স্বধর্মের মধ্যে চিত্তবৃত্তির স্থান নেই। বংশানুক্রমে হাঁড়ি তৈরি করা বা ঘানির থেকে তেল বের করা বা উচ্চতর বর্ণের দাস্যবৃত্তি করা কঠিন নয়, বরং তাতে মন যতই মরে যায় কাজ ততই সহজ হয়ে আসে। এই-সকল হাতের কাজেরও নূতনতর উৎকর্ষ সাধন করতে গেলে চিত্ত চাই। বংশানুক্রমে স্বধর্ম পালন করতে গিয়ে তার উপযুক্ত চিত্তও বাকি থাকে না, মানুষ কেবল যন্ত্র হয়ে একই কর্মের পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। যাই হােক, আজ ভারতে বিশুদ্ধভাবে স্বধর্মে টিকে আছে কেবল শূদ্রেরা। শূদ্রত্বে তাদের অসন্তোষ নেই। এইজন্যেই ভারতবর্ষের-নিমকে-জীর্ণ দেশে-ফেরা ইংরেজ-গৃহিণীর মুখে অনেক বার শুনেছি, স্বদেশে এসে ভারতবর্ষের চাকরের অভাব তারা বড়াে বেশি অনুভব করে। ধর্ম-শাসনে পুরুষানুক্রমে যাদের চাকর বানিয়েছে তাদের মতাে চাকর পৃথিবীতে কোথায় পাওয়া যাবে? লাথি-ঝাটা-বর্ষণের মধ্যেও তারা স্বধর্ম রক্ষা করতে কুণ্ঠিত হয়। তারা তাে কোনাে কালে সম্মানের দাবি করে নি, পায়ও নি, তারা কেবল শূদ্রধর্ম অত্যন্ত বিশুদ্ধভাবে রক্ষা করেই নিজেকে কৃতার্থ মনে করেছে। আজ যদি তারা বিদেশী শিক্ষায় মাঝে মাঝে আত্মবিস্মৃত হয়, তবে সমাজপতি তাদের স্পর্ধা সম্বন্ধে আক্রোশ প্রকাশ করে।

 স্বধর্মরত শূদ্রের সংখ্যাই ভারতবর্বে সব চেয়ে বেশি, তাই এক দিক থেকে দেখতে গেলে ভারতবর্ষ শূদ্রধর্মেরই দেশ। তার নানা প্রমাণ ইতিহাসে পাওয়া গেছে। এই অতি প্রকাণ্ড শূদ্রধর্মের জড়ত্বের ভারাকর্ষণে ভারতের সমস্ত হিন্দুসম্প্রদায়ের মাথা হেঁট হয়ে আছে। বুদ্ধিসাধ্য জ্ঞানসাধ্য চারিত্রশক্তিসাধ্য যে-কোনাে মহাসম্পলাভের সাধনা আমরা আজ করতে চাই তা এই প্রবল শূদ্রত্বভার ঠেলে তবে করতে হবে তার পরে সেই সম্পদকে রক্ষা করবার ভারও এই অসীম অন্ধতার হাতে সমর্পণ করা ছাড়া আর উপায় নেই। এই কথাই আমাদের ভাববার কথা।

 এই শূদ্রপ্রধান ভারতবর্ষের সব চেয়ে বড়াে দুর্গতির যে ছবি দেখতে পাই সেই পরম আক্ষেপের কথাটা বলতে বসেছি।

 প্রথম বারে যখন জাপানের পথে হংকঙের বন্দরে আমাদের জাহাজ লাগল দেখলুম, সেখানে ঘাটে একজন পাঞ্জাবি পাহারাওয়ালা অতি তুচ্ছ কারণে একজন চৈনিকের বেণী ধরে তাকে লাথি মারলে। আমার মাথা হেঁট হয়ে গেল। নিজের দেশে রাজভৃত্যের-লাঞ্ছনা-ধারী-কর্তৃক স্বদেশীর এরকম অত্যাচার-দুর্গতি অনেক দেখেছি, দূর সমুদ্রতীরে গিয়েও তাই দেখলুম। দেশে বিদেশে এরা শূদ্রধর্ম পালন করছে। চীনকে অপমানিত করবার ভার প্রভুর হয়ে এরা গ্রহণ করেছে; সে সম্বন্ধে এরা কোনাে বিচার করতেই চায় না, কেননা এরা শূদ্রধর্মের হাওয়ায় মানুষ। নিমকের সহজ দাবি যত দূর পৌছায় এরা সহজেই তাকে বহু দূরে লঘন করে যায়; তাতে আনন্দ পায়, গর্ব বােধ করে।

 চীনের কাছ থেকে ইংরেজ যখন হংকং কেড়ে নিতে গিয়েছিল তখন এরাই চীনকে মেরেছে। চীনের বুকে এদেরই অস্ত্রের চিহ্ন অনেক আছে— সেই চীনের বুকে যে চীন আপন হৃদয়ের মধ্যে ভারতবর্ষের বুদ্ধদেবের পদচিহ্ন ধারণ করেছিল, সেই ইংসিং হিউয়োঙের চীন।

 মানববিশ্বের আকাশে আজ যুদ্ধের কালাে মেঘ চার দিকে ঘনিয়ে এসেছে। এ দিকে প্যাসিফিকের তীরে ইংরেজের তীক্ষ্ণচঞ্চুখরনখরদারুণ শ্যেনতরণীর নীড় বাঁধা হচ্ছে। পশ্চিম মহাদেশে দিকে দিকে রব উঠেছে। যে, এশিয়ার অস্ত্রশালায় শক্তিশেল-তৈরি চলছে, য়ুরােপের মর্মের প্রতি তার লক্ষ। রক্তমােক্ষণক্লান্ত পীড়িত এশিয়াও ক্ষণে ক্ষণে অস্থিরতার লক্ষণ দেখাচ্ছে। পূর্বমহাদেশের পূর্বতম প্রান্তে জাপান জেগেছে, চীনও তার দেওয়ালের চার দিকে সিধ কাটার শব্দে জাগবার উপক্রম করছে। হয়তাে একদিন এই বিরাটকায় জাতি তার বন্ধন ছিন্ন করে উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে, হয়তাে একদিন তার আফিমে-আবিষ্ট দেহ বহু কালের বিষ ঝেড়ে ফেলে আপনার শক্তি উপলব্ধি করতে পারবে। চীনের থলিঝুলি যারা ফুটো করতে লেগেছিল তারা চীনের এই চৈতন্যলাভকে য়ুরােপের বিরুদ্ধে অপরাধ বলেই গণ্য করবে। তখন এশিয়ার মধ্যে এই শূদ্র ভারতবর্যের কী কাজ? তখন সে য়ুরােপের কামারশালায় তৈরি লােহার শিকল কাঁধে করে নির্বিচারে তার প্রাচীন বন্ধুকে বাঁধতে যাবে। সে মারবে, সে মরবে। কেন মারবে, কেন মরবে, এ কথা প্রশ্ন করতে তার ধর্মে নিষেধ। সে বলবে: স্বধর্মে হননং শ্রেয়ঃ, স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়। ইংরেজ-সাম্রাজ্যের কোথাও সে সম্মান চায়ও না, পায়ও না; ইংরেজের হয়ে সে কুলিগিরির বােঝা বয়ে মরে, যে বােঝার মধ্যে তার অর্থ নেই, পরমার্থ নেই; ইংরেজের হয়ে পরকে সে তেড়ে মারতে যায়, যে পর তার শত্রু নয়;কাজ সিদ্ধ হবা মাত্র আবার তাড়া খেয়ে তােষাখানার মধ্যে ঢােকে। শূদ্রের এই তাে বহু যুগের দীক্ষা। তার কাজে স্বার্থও নেই, সম্মানও নেই, আছে কেবল ‘স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ এই বাণী। নিধনের অভাব হচ্ছে না; কিন্তু তার চেয়েও মানুষের বড়াে দুর্গতি আছে যখন সে পরের স্বার্থের বাহন হয়ে পরের সর্বনাশ করাকেই অনায়াসে কর্তব্য বলে মনে করে। অতএব এতে আশ্চর্যের কথা নেই যে, যদি দৈবক্রমে কোনােদিন ব্রিটানিয়া ভারতবর্ষকে হারায় তা হলে নিশ্বাস ফেলে বলবে:। miss my best servant.

 অগ্রহায়ণ ১৩৩২।