জীবনী কোষ/ভারতীয়-পৌরাণিক/মহাকালী

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন

মহাকালী

(১) অন্ধকাসুরের রক্তপান করিবার জন্য মহাদেব কর্ত্তৃক সৃষ্ট জনৈক মাতৃকা। মৎ-১৭৯। (মাতৃকা দেখ)।

(২) মূল প্রকৃতিদেবী এক হইয়াও জগৎকার্য্যের জন্য অনেকত্ব প্রাপ্ত হন। তাঁহার ঐ এক অংশ মহাকালী। অপর অংশদিগের মধ্যে লক্ষ্মী ও ব্রাহ্মণী প্রধানা। শিব-জ্ঞান-৪।

(৩) ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও রুদ্র ইঁহারা যথাক্রমে সত্ব, রজঃ ও তমোগুণের আধার। রুদ্রকে যে গুণরূপা দেবী আশ্রয় করিয়াছিলেন, তিনি মহাকালী নামে প্রসিদ্ধা। পরে তিনি পার্ব্বতীরূপে জন্মগ্রহণ করিয়া শিবকে আশ্রয় করেন। শিব-জ্ঞান-৬। (সতী দেখ)।

(৪) পরমা আদ্যাশক্তিরই একনাম মহাকালী। তিনি বিষ্ণুর কাতর প্রার্থনায় মধুকৈটভ নামক দানব ভ্রাতৃদ্বয়ের বধের সাহায্য করিবার জন্য উপস্থিত হন। দেবীভা-১স্ক-৯, ১০স্ক-১১।

(৫) দেবী দুর্গা শিবকে মহাকালী নামক শক্তি প্রদান করেন। দেবীভা-৩স্ক-৬। (ব্রহ্মা (৪৯) দেখ)।

(৬) দশ মহাবিদ্যার অন্যতমা। শ্রীমহাভা-১৮। (মহাবিদ্যা দেখ)।

(৭) কৈলাসস্থিতা দেবীর দুই মূর্ত্তির অন্যতমা মহাকালী। ঐ মহাকালীরূপা দেবী দেবগণেরও দুর্গম রত্নপুরীতে বাস করেন। সহস্র সহস্র ভৈরব ঐ পুরীর দ্বার সমুদয় রক্ষা করেন। ব্রহ্মাদি দেবগণও দুর্গার আদেশ ব্যতীত ঐ দ্বার অতিক্রম করিতে পারেন না। সেই রমণীয় পুরীতে রত্ন নির্ম্মিত মন্দিরে মহা রত্নসিংহাসনোপরি শবাসনে মহাকালী দেবী অবস্থিতা। সেই মহাদেবী একা স্বেচ্ছায় ব্রহ্মরূপিণী। চতুঃষষ্ঠী যোগিনীগণ তাঁহার পরিচর্য্যা করেন। তাঁহার দক্ষিণভাগে মহাকাল সদাশিব অবস্থিত। শ্রীমহাভা-৫৯।

(৮) প্রভাসক্ষেত্রে মহাকালী দেবীর মহাপীঠ অবস্থিত। কৃষ্ণাষ্টমীর মহানিশায় গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, বলি প্রভৃতি দ্বারা তাঁহার পূজা করিতে হয়। স্কন্দ-প্রভা-প্রভা-১৩৩।

(৯) সীতার রোমকূপ হইতে নির্গতা জনৈক মাতৃকা। অদ্ভু-রামা-২৩।

(১০) সীতার অষ্টোত্তর সহস্র নামের অন্যতম। (সীতা দেখ)।

হইয়া তাঁহাকে “রায়” উপাধি প্রদান পূর্ব্বক তাঁহাকে শ্রীহট্টের কাননগু ও দস্তিদার পদে নিযুক্ত করেন। কবিবল্লভের সুবিদ রায় ও শ্যাম দাস রায় নামে দুই পুত্র জন্মে। তন্মধ্যে সুবিদ রায় পিতৃপদ প্রাপ্ত হন। সুবিদ রায়ের পুত্র সম্পদ রায়, সম্পদ রায়ের পুত্র যাদব রায়। ইহাঁরা উভয়েই শ্রীহট্টের কাননগু ও দস্তিদার ছিলেন। নিঃসন্তান যাদব রায়ের পরে, শ্যাম দাস রায়ের পৌত্র, লক্ষ্মী নারায়ের পুত্র হরকৃষ্ণ রায় শ্রীহট্টের শাসনকর্ত্তা হইয়াছিলেন। হরকৃষ্ণ রায়ের কৃষ্ণ রায় নামে এক জ্যেষ্ঠ সহোদরও ছিলেন।

কবিরত্ন সরস্বতী—তাঁহার পিতা চক্রপাণি কায়স্থ এবং আসামের কামরূপের রাজা দুর্লভ নারায়ণের একজন রাজস্ব আদায়কারী ছিলেন। কবিরঞ্জন সরস্বতী তাঁহার পুত্র রাজ ইন্দ্রনারায়ণের সমসাময়িক ছিলেন। তিনি আসামী ভাষায় ‘জয়দ্রথ বধ’ কাব্য রচনা করেন।

কবিরাজ—একজন অসমীয়া কবি। তিনি জয়ন্তিয়া-রাজ কামদেবের সভাপণ্ডিত ছিলেন। তৎরচিত গ্রন্থের নাম ‘রাঘব পাণ্ডবীয়’। তিনি খ্রীঃ একাদশ শতাব্দীতে বর্ত্তমান ছিলেন।

কবিরাজ চক্রবর্ত্তী—তিনি আসামের অন্তর্গত কামরূপের অধিবাসী। তাঁহার রচিত জ্যোতীষ সম্বন্ধীয় ‘ভাস্বতী’ নামে একখানা গ্রন্থ আছে।


কবিশূর—রাঢ়দেশের একজন রাজা। তিনি খুব সম্ভব খ্রীঃ সপ্তম শতাব্দীর শেষভাগে দক্ষিণাঞ্চল হইতে আসিয়া রাঢ়দেশে একটি রাজ্য স্থাপন করেন। কবিশূরের পুত্র মাধবশূর। তৎপুত্র আদিশূর। (ইনি বাঙ্গালার অন্যতম প্রসিদ্ধ নরপতি আদিশূর নহেন।) এই গ্রন্থের শ্লোক সমূহ দ্ব্যর্থ বোধক। এক অর্থে রাঘববংশীয়দিগের এবং অপর অর্থে পাণ্ডবদিগের গৌরব গৃহীত হয়।

কবীন্দ্র—‘গোরক্ষবিজয়’ অথবা ‘মীনকেতন’ নামক গ্রন্থের রচয়িতা একজন কবি। গোরক্ষনাথের মাহাত্ম্য প্রচার জন্যই উক্ত গ্রন্থ রচিত হয়। গোরক্ষনাথ দেখ।

কবীর—মধ্যযুগে মুসলমান রাজত্বের সময়ে ভারতে অনেক ধর্ম্ম-সংস্কারক জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। তাঁহাদের মধ্যে রামনন্দের শিষ্য কবীর একজন প্রধান। তাঁহার পরবর্ত্তী ধর্ম্ম সংস্কারকদের উপরও তাঁহার প্রভাব বহুল পরিমাণে বিস্তার লাভ করিয়াছিল। কবীর ১৩৯৮ খ্রীঃ অব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৫১৮ সালে (মতান্তরে ১৪৫০) পরলোক গমন করেন। তিনি মুসলমানজাতীয় জোলার (তাঁতির) ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতার নাম নীরু ও মাতার নাম নীমা ছিল। মুসলমান আমলে অনেক হিন্দু তাঁতি মুসলমান হইয়া