পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
১০৩
মান্দালয় জেল
২৭।৭।২৬

পূজনীয়া মেজবৌদিদি,

 আপনার ১৪ই জুলাইর পত্র আজ পেয়েছি, অশোকের পত্র আমি ইতিপূর্ব্বে পেয়েছি। শীঘ্র উত্তর দিব। ন’দাদা এখন কি চাকরী করছেন? তিনি কি পুরান চাকরী নিয়ে সিজুয়ায় গেছেন, না নূতন চাকরী নিয়ে? সেজদিদি গোরক্ষপুর গেলে কি গোরাকে রেখে যাবেন, না ছেলেমেয়েদের সকলকে নিয়ে যাবেন? মা ও বাবার পত্র অনেকদিন হ’ল পাই নাই। গেজেটে দেখলুম গোপালী পাশ করেছে। সে এখন কি করবে? আপনি মা বাসন্তী দেবীর নিকট মধ্যে মধ্যে যান শুনে আমি সুখী হয়েছি। তিনি এখন কোন্ বাড়ীতে থাকেন? তাঁকে একবার দেখতে আমার বড় ইচ্ছা হয়— কিন্তু উপায় নাই। সরকারের খোসামুদী আমার দ্বারা হবে না। তাঁর উপর্য্যুপরি এই রকম বিপদের সময়ে আমি তাঁর কোনও রকম সেবা করতে পারলুম না, ইহাই আমার দুঃখ ও দুর্ভাগ্য।

 এখানে বৃষ্টি খুব সামান্য হয়। কিন্তু তবুও গরম এমাসটা কম আছে। এখানকার স্বাস্থ্য এখন ভাল নয়—অসুখ-বিসুখ জেলখানায় এবং সহরে খুব হচ্ছে। আমাদের মধ্যে একজনের ইনফ্লুয়েঞ্জার মত অসুখ হয়—তার নাম Sandfly fever, একরকম মশা কামড়ালে নাকি হয়। তারপর আর একজনের এ্যাপিণ্ডিসাইটিস ((Appendicitis) হয়। তারপর আর একজনের ডেঙ্গু জ্বর হয়। আমাদের আশঙ্কা হয়েছিল বুঝি টাইফয়েড হবে কিন্তু ষষ্ঠ দিনে জ্বর ছেড়ে গেল। এ সময়টা কারও স্বাস্থ্য ভাল নয়—কাজকর্ম্মে মন লাগে না। গুরুতর অসুখ আমার কিছু হয় নাই।

 আপনারা সকলে কেমন আছেন? পূজার ছুটি কবে আরম্ভ হবে? আপনারা ছুটিতে কি কাশিয়াং যাবেন না অন্যত্র?

 এখানে আপাততঃ গুরুতর অসুখ কাহারও নাই। এখানে আমাদের দলপুষ্টি হবে—এখানকার সব কথাবার্ত্তা ও ব্যবস্থা থেকে মনে হয়। আমার প্রণাম জানবেন।

ইতি— 
সুভাষ