পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( • ) কণাতখন ভাবুকের দৃষ্টির নিকট, সেই দৌন্দর্য্য আত্মগোপন করিতে পারে ন৷। একটি জাতি বলিলে, নানা প্রকারের বহু নরনারীকে বুঝায়। সুতরাংজাতির জীবন অনন্ত বৈচিত্রময়। দ্বিতীয়তঃ, এই বৈচিত্র্যময়। জীবন নিয়ত পরিবর্তনশীল– সর্বদাই এক মুদূরবর্তী লক্ষ্যের অভিমুখে অগ্রসর হইতেছে। কোনও সাহিত্য‘জাতীয়-সাহিত্য–এই নামে। অভিহিত হইবার যোগ্য কি না, তাহ নিদ্ধারণ করিতে হইলে দেখিতে হইবে—এই সাহিত্যে জাতির জীবনের বৈচিত্র্য, পরিবর্তন ও উন্নতিমুখী গতি, কি পরিমাণে প্রতিফলিত হইয়াছে। রাজা রামমোহন রায়ের সময়ে আমাদের দেশে, জাতীয়-সাহিত্য প্রতিষ্ঠার সূত্রপাত হইয়াছে। কিন্তু একদিনে জাতীয় সাহিত্য গড়িয়া উঠিবার নহে॥ প্রত্যেক মানুষকে জাগিয়া উঠিতে হইবে, আত্মজ্ঞান লাভ করিতে হইবে। সাহিত্য এই প্রকাশের বাহন। সাহিত্যের দ্বারা আমরা। প্রত্যেকে অপরকে বুঝিব, অপরের সহিত সহানুভূতিসম্পন্ন হইয়া প্রেমসুত্রে বন্ধ হইব এবং আমাদের মধ্যে বাহ্যজীবনে বৈষম্য ও ব্যবধান থাকিলেও, হৃদয়রাজ্যে আমরা সকলেই যে এক পরম ঐক্য-সূত্রে বদ্ধ তাহা বুঝিতে পারিব॥ জাতীয়-সাহিত্যের সাধনা, মানুষকে এই শিক্ষায় শিক্ষিত করিবে, এই দীক্ষায় দীক্ষিত করিবে। জাতীয় সাহিত্যের পর=বিশ্বমানবের সাহিত্য। কিন্তু সে বিষয়ের এখন আলোচনা করার প্রয়োজন নাই। পূর্বে বলিয়াছি, সাহিত্যের আলোচনায় দুইটি বিষয়ের আলোচনা করিতে হইবে-ভাব ও ভাষা। ভাবের আলোচনা দ্বারা অনেকে। দেখাইয়াছেন, বাঙ্গালী জাতির হদয় ও মন বাঙ্গালা সাহিত্যের মধ্যে কি প্রকারে ক্রমে ক্রমে পরিস্কট হইতেছে। কিন্তু ভাষার আলোচনা দ্বারা এই তত্ব দেখাইবার। তেমন বিশেষ চেষ্টা হয় নাই। অর্থাৎ, বাঙ্গালা সাহিত্যের রচনা-রীতি বা পদবিন্যাস, অস্তমুর্থী হইয়া বিশেষভাবে আলোচিত