পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১S ) করিতেন—জনসাধারণের সেখানে প্রবেশ করিবার অধিকার ছিল না। বেদপাঠ হইয়া যাওয়ার পর, যখন বাহিরে আসিয়া বন্ধুতা৷ হইত, তথন অবষ্ট্য সকলে তাহাতে যোগ দিতে পারিতেন। এই ব্যবস্থ৷ হইতে বুঝিতে পার৷। যাইতেছে যে, ব্রাহ্মসমাজের নেতৃগণ তখনও জন-সাধারণের সহিত সমান ভাবে মিশিতে পারেন নাই। তাহার উপদেষ্টা ও শিক্ষকরূপে নিজেদের উন্নত শ্রেণীর লোক বলিয়া মনে করিতেন এবং জন-সাধারণ তাহাদের উপদেশ গ্রহণ করিবে, ইহাই আশা করিতেন। শিক্ষাদান কার্য্যের দুই প্রকারের আদর্শ, বর্ত্তমান সময়ে আলোচিত হইয়া থাকে। বর্তমান। যুগের সিদ্ধান্ত এই যে, শিক্ষককে ছাত্রের নিকট যাইতে হইবে—দুত্রকে বুঝিতে হইবে, ছাত্রের ভাবের ভাবুক হইতে হইবে এবং ছাত্রের সহিত সম্পূর্ণরূপে বন্ধুর ত্যায় মিশিয়া, তাহাকে সম্মান করিয়া, তাহাকে আনন্দদান পূর্বক, তাহার স্বাধীন অমুসন্ধিৎসাবৃত্তি জাগাইয়া, তাহাকে উন্নীত করিতে হইবে। এই পদ্ধতি অত্যন্ত আধুনিক। আমাদের। দেশে, এই পদ্ধতি এখনও সাধারণত: অপরিচিত —অন্ততঃ পক্ষে, এই পদ্ধতিতে আমরা এখনও অভ্যস্ত হই নাই। প্রাচীন কালের পদ্ধতি। অন্যরূপ— ছালকে শাসন করিয়া, ভয় দেখাইয়া, শিক্ষকের অনুগত করিতে হইবে; এই আনুগত্যের দ্বারা ছাত্র ক্রমশঃ উন্নতির পথে অগ্রসর হইবে। এই প্রাচীন পদ্ধতি হইতে আধুনিক পদ্ধতিতে একেবারে আসিয়া উপস্থিত। হওয়া সম্ভব নহে। কতকগুলি স্তর অতিক্রম করিয়া প্রাচীন পদ্ধতি হইতে নূতন পদ্ধতিতে আসিতে হইবে। অক্ষয়কুমার দত্তের ভাষা যে সৰ্ব-সাধারণের সুবোধ্য নহে, এবং তিনি। যে ইচ্ছা কঢ়িয়াই সংস্কৃত শব বহুল পরিমাণে ব্যবহার করিয়াতাহার রচনা মার্জিত ও অলঙ্কত করিয়াছেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। কিন্তুঙাহার পূর্বের সংস্কৃতবিৎ বাঙ্গালা লেখকেরা ভাষাকে ওজী ও গম্ভীর করিবার।