পাতা:অজাতশত্রু শ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের অনুধ্যান - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১০ অজাতশত্রু শ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের অনুধ্যান কর্মভাব ও বুদ্ধিবৃত্তি দেখিয়া একবার বিদ্রুপ করিয়া বলিয়াছিল, “শালা রাখাল, তুই যদি না সাধু হতিস, তাহলে তােদর দেশের জমিদারগুলােকে ত্রস্ত করে তুলতিস। সাধু হয়েছিস, দেখিস, যেন পরের জমি ফন্দি করে কেড়ে নিসনি।” ব্রহ্মানন্দ এই কথা শুনিয়া অত্যন্ত বিচলিত হইয়াছিল—সাধু হইয়া যেন অকারণে কাহারও জমি গ্রহণ না করে। স্বামিজীর উক্তিটী ব্রহ্মানন্দের কর্ম্ম-শক্তি ও বুদ্ধিমত্তার যথেষ্ট পরিচায়ক। দেখিতে পাওয়া যায় যে, অধিকাংশ ব্যক্তিই একটী ভাবে নিমজ্জিত হইয়া যায়, অপর ভাব বিস্মৃত হয়; কিন্তু ব্রহ্মানন্দের ভিতর দেখিয়াছি যেমনি ধ্যানীর ভাব, তেমনি ভাব কশ্মীর। কোন ভাবই তাহাকে অভিভূত করিতে পারি না। সে নিজে। হইল সর্ব্বত্যাগী, মহাযােগী, কিন্তু স্বামিজীর আদেশ - সেইজন্য কার্য্য করিত। কার্যের জন্যই কার্য্য করিত। একই মানবে, একই সময়ে – এইরূপ যােগী ও কর্মীর উভয়বিধ ভাব খুব কমই দেখিতে পাওয়া যায়। নিঃস্বার্থ কর্মী ও সক্রিয় ত্যাগী কাহাকে বলে, ব্রহ্মানন্দের জীবন তাহার বিশিষ্ট উদাহরণ। ব্রহ্মানন্দ ভবিষ্যতে রামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের আদর্শ-পুরুষ হইয়া থাকিবে। অবশ্য, এস্থলে অপর সকলকেও গণনা করিতে হইবে; কিন্তু ব্রহ্মানন্দ এই বিপরীত ভাবের সংমিলন ও সংমিশ্রণ দেখাইয়া সকলের শীর্ষস্থানীয় হইয়াছিল। মন কত উচ্চে উঠিলে যে, এইরূপ বিপরীত ভাব একসঙ্গে ধারণ করিতে পারা যায়, তাহ। বিশেষরূপে চিন্তা করিবার বিষয়।