৩৮ অজাতশত্রু শ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের অনুধ্যান করিতে লাগিলেন। পূর্বদিন রাত্রে যে জিহ্বা রাজভােগ আস্বাদন করিয়াছিল, সেই জিহবা কেবলমাত্র লবণ সংসােগে ভিক্ষার অন্ন আস্বাদন করিতে চেষ্টা করিল। প্রথমবার যেমন অন্ন মুখে দিলেন অমনই বমনের উদ্রেক হইল। গৌতম ক্ষণকাল নীরবে থাকিয়া পুনরায় সেই অন্ন মুখে দিলেন। আবার উদগীরণ আসিল। তাহার পর গৌতম আত্মসংযম করিয়া মন ও জিহবাকে ভৎসনা করিলেন,-“জিহ্বা ! এখনও তুমি রাজভােগ প্রত্যাশা কর? তুমি যে এখন ভিখারী! লবণসংযুক্ত অন্ন জুটিয়াছে, ইহাই তােমার পক্ষে যথেষ্ট। ইহা অপেক্ষা অধিক আশা বা আকাঙক্ষা করিও না।” যুবা রাখাল ও অপর সকলে যখন বরানগরের মঠে অপরের বাড়ী হইতে ভিক্ষা করিয়া কিঞ্চিৎ চাউল আনিত এবং উহ সিদ্ধ করিয়া, একটা কাপড়ে ঢালিয়া, সকলে ঘেরিয়া বসিয়া নুন ও লঙ্কার ঝােল দিয়া আহার করিত, তখন বুদ্ধের এই অবস্থার সহিত উহার অনেকটা সৌসাদৃশ্য আছে দেখিতে পাওয়া যায়। যাহারা ভদ্রঘরের ছেলে, নানাবিধ উৎকৃষ্ট জিনিষ আহার করিত, তাহারা কিনা ভিক্ষার চাউল সিদ্ধ করিয়া কাপড়ে ঢালিয়া কেবলমাত্র নুন ও লঙ্কার ঝােল দিয়া। আহার করিতেছে ! পরমহংস মহাশয় নরেন্দ্রনাথকে বলিয়াছিলেন, “রাখাল হ’ল । আমার অতি দুর্বল ছেলে। একে বিশেষ করে দেখাশুনা কোরাে।” এই আদেশ অনুযায়ী সকলেই, বিশেষ করিয়া নরেন্দ্রনাথ, দুর্বল, নিরীহ রাখালের প্রতি সর্বদা দৃষ্টি