অজাতশত্রু শ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের অনুধ্যান ৫১ করিতে লাগিল। চক্ষু বিস্ফারিত ও উদ্ধদৃষ্টি এবং কোন সংজ্ঞা নাই, পদবিক্ষেপ পরিমিত স্থানের ভিতর হইতেছে, কখনও তাহার বাহিরে যাইতেছেনা। ইহাকে বলে ‘চেতন সমাধি। ভগবান বুদ্ধদেবের একবার এইরূপ হইয়াছিল। ইহাকে বৌদ্ধগ্রন্থে ‘চক্কমণ’ বা ‘পরিভ্রমণ বলে। চলতি বাংলায় ইহাকে ‘চাকান’ বলে। | আমি বেলা চারিটার সময় যাইলাম, তখনও নরেন্দ্রনাথ ঠিক এইরূপ পদচারণ করিতেছে, দেহেতে মন নামিতেছে না। ভিতরে যাইবার দরজাতে সকলেই দাড়াইয়া আছে, সকলেই মহা উদ্বিগ্ন, কেহ কিছুই স্থির করিতে পারিতেছে না। যুবা রাখাল আমাকে কাতরভাবে বলিল, “ নরেন আজ খাবার পর থেকে কি রকম হয়ে রয়েছে; আমরা কেউ সুমুখে যেতে সাহস করছি না, ভয় হচ্ছে সে দেহত্যাগ করবে। কারণ, পরমহংস মহাশয় অনেক সময় বলেছিলেন যে, তিনি নরেনকে মায়া দিয়ে সব সময় আচ্ছন্ন করে রাখবেন; যদি সে নিজেকে বুঝতে পারে তা হলে সে দেহত্যাগ করবে। ভয় হচ্ছে আজ সে দেহ ছেড়ে দেবে!” এই বলিয়া আমাকে অতি অনুনয় করিয়া বলিতে লাগিল,—“তুমি সুমুখে গিয়ে খুব চেঁচামেচি করে নরেনের সমাধি ভঙ্গ কর, তা হলে আমরা সুমুখে যাব।” এদিকে প্রায় সন্ধ্যা হইয়া আসিল, তখনও নরেন্দ্রনাথের কোন সংজ্ঞা নাই। আমি অনন্যোপায় হইয়া খুব চীৎকার করিয়া ডাকিতে লাগিলাম। শ্রবণেন্দ্রিয় বন্ধ, কোন শব্দই প্রবেশ করিল না।
পাতা:অজাতশত্রু শ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের অনুধ্যান - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/৬৭
অবয়ব