অজাতশত্রু শ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের অনুধ্যান ৫৯ উঠিয়া বুকের অসুখ হইল। যুবা রাখাল, শীতকালে সকাল বেলা বলরাম বাবুর বাড়ী হইতে আমাদের রামতনু-বসু-গলির বাড়ীতে আসিত এবং আমরা দুইজনে কাঁসারিপাড়ায় যাইয়া ছেলেটীকে দেখিয়া আসিতাম। ১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দে স্বামিজী, সারদানন্দ ও আমি ইংলণ্ডে পিকিনিজ গ্রীন (Pinkerseys Green) নামক গ্রামে মিস্ মূলার-এর (Miss Muller-এর বাড়ীতে অবস্থান করিতেছিলাম। একদিন আমরা বৈঠকখান ঘরে বসিয়া আছি এমন সময় একখানি চিঠি আসিল। চিঠিতে লেখা ছিল যে, রাখালের ছেলেটী মারা গিয়াছে ও রাখাল বড় ব্যথিত হইয়া পড়িয়াছে। বােধ হয় ছেলেটীর বয়স তখন এগার বৎসর হইবে। স্বামিজী শুনিয়া দুঃখ করিতে লাগিল, “মনে করেছিলুম ছেলেটী বড় হলে মঠে নিয়ে সাধু করব। রাখালের মত উচ্চ অবস্থার লােক ও দুঃখ করে ! পুত্রশােক কি ভয়ঙ্কর !” এইরূপ নানাপ্রকার কথা হইল। আমি বেলুড় মঠে একসময় স্বামিজী সম্বন্ধে কিছু লিখিবার কালে রাখালকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, “সত্য’র ভাতে শ্যামপুকুরের বাড়ীতে যে খাইয়েছিলে–সেটা কোন্ দিন ? তারিখট। কি মনে আছে ?” পুত্রশােক কি ভয়ঙ্কর ও তীব্র ! এই কথাটীতেই তাহার পূর্বস্মৃতি জাগিয়া উঠিল এবং সে জড়সড় ও বিহবল হইয়া পড়িল। দেখিলাম যে সে মনে বড় ব্যথা পাইয়াছে, কথাটা উল্লেখ করা ভাল হয় নাই। আমি তখনই সরিয়া যাইলাম।
পাতা:অজাতশত্রু শ্রীমৎ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের অনুধ্যান - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/৭৫
অবয়ব