বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
১৪২

 এমন সময় পান্না রেকাব ও চায়ের পেয়ালা হাতে ধরে ঢুকে বললে—কি মাসী কি বলচো ওঁকে? যাও এখন ঘর থেকে—

 বৃদ্ধা আমার দিক থেকে ওর দিকে ফিরে বললে—দ্যাখ পানু, বাড়াবাড়ি কোন বিষয়ে ভালো না। দু’জনকেই হিত কথা শোনাচ্চি বাপু,—কষ্ট পেতে আমার কি, তোরা দুজনেই পাবি—

 পান্না ব্যঙ্গের সুরে বললে—তুমি এখন যাবে একটু এ ঘর থেকে? ওঁকে এখন বোকো না। সমস্ত রাত ওঁর খাওয়া হয়নি জানো?

 বুড়ি বললে—বেশ তো, আমি কি বন্নু খেয়ো না, মেখো না, খাও দাও, তারপর সরে পড়—

 —তুমি এবার সরে পড় মাসী, দেখি—

 বুড়ি গজ গজ করতে করতে চলে গেল। পান্না আমার সামনে এসে রেকাব নামাল, তাতে একটুখানি হালুয়া ছাড়া অন্য কিছু নেই। এই অবস্থায় সুরবালা কত কি খাওয়াতো। পান্নার মত মেয়েরা সেদিক থেকে বড্ড আনাড়ি, খাওয়াতে জানে না। আমার খাওয়ার সময়ে পান্না নিজেই বললে—বুড়ি বড় খিটখিট করে না? চলো আজ দু’জনে কালীঘাট ঘুরে আসি, কি কোথাও দেখে আসি—

 আমি আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম যেন। ব্যগ্রভাবে বলি—যাবে তুমি? কখন যাবে? উনি বকবেন না? যেতে দেবেন তোমাকে?