পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টান টানা ডাগর চোখ দুটিতে যেন কিসের স্বপ্ন মাখা । ওর সারা দেহে কি হাড় নেই ? এমন লীলায়িত ভঙ্গিতে দেহ লতায় হিল্লোল তুলেচে। তবে কি করে? নারীদেহ এমন সুন্দরও হয় ! মেয়েটি আমার দিকে আবার এগিয়ে আসচে আমার দিকে চেয়ে চেয়ে। কিন্তু ওর মুখে চোখে বেপরোয়া ভাব নেই, ক্রীড়া ও কুণ্ঠায় চোখের পাতা দুটি যেন আমার দিকে এগিয়ে আসার অৰ্দ্ধ পথেই নিমীলিত হয়ে আসচে। সে কি অবর্ণনীয় ভঙ্গি ! আর গান ? সে গানের তুলনা হয় না। কিন্নরকণ্ঠ বলে একটা কথাই শোনা ছিল, কখনো জানতাম না সে - কি জিনিস। আজ ওর গলা শুনে মনে হোল, এই হোল সেই জিনিস। এ যদি কিয়ারকাষ্ঠী না হয়, তবে কার প্রতি ও-বিশেষণ সুষ্ঠুভাবে প্রযুক্ত হবে ? আবদুল হামিদ এতক্ষণ কি বলেচে। আমি শুনতে পাইনি। সে এবার আমার পা ঠেলতেই আমি যেন অনেকটা চমকে ম। দুপাটি দাত বের করে আমার সামনে একটা সিগারেট ধরে সে বলচে-শুনতে পান না যে ডাক্তারবাবু! নিন।-- আমার লজ্জা হোল। কি ভেবে আবদুল হামিদ একথা বলচে কি জানি। ও কি বুঝতে পেরেচে। যে আমি ওই মেয়েটিকে এক দৃষ্টি চেয়ে দেখচি ? বোধ হয় পায়নি। কত লোকই তো দেখচে, আমার কি দোষ ? গোবিন্দ দা বললে—একবার কলকাতায় গেলে আমার দোকানে পায়ের ধুলো দেবেন।